শর্তসাপেক্ষে মিলল বিজেপির ‘গণতন্ত্র যাত্রা’র অনুমতি। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার এই রায় দেন। রাজ্য সরকারের দেওয়া নির্দেশ খারিজ করে তিনি জানান, যে তিন জেলা দিয়ে রথ যাবে, সেই জেলা প্রশাসনকে দেখতে হবে কীভাবে যাত্রা হবে।
তবে, বিচারপতি তাঁর নির্দেশে বলেন, এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাত্রা নিয়ে যাওয়ার ১২ ঘণ্টা আগে রুট জানাতে হবে বিজেপিকে। আইন মেনে মানুষের কোনও অসুবিধা যাতে না হয় তা দেখতে হবে। কোনও ক্ষতি হলে বিজেপিও সমানভাবে দায়ী হবে। একই সঙ্গে পুলিসকে পর্যাপ্ত পুলিস মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পরেও, যান্ত্রিকভাবে যাত্রার অনুমতি বাতিল করা হয়। সরকারের সেই নির্দেশ খারিজ করেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। প্রশাসনের সঙ্গে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পরে আদালতের রায়ে তাঁরা খুশি বলে জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্টের বিচারপতিরা এ দিন তাঁদের রায়ে বলেন, রথযাত্রার সময় যাতে অশান্তি না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে বিজেপি-কে। অশান্তি হলে তার দায় থাকবে বিজেপি-রও।
দিলীপ ঘোষের মতই রায় ঘোষণার পর বিজেপি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বাংলার পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, “বিজেপি-র রথযাত্রার উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক। তাকে রাজনৈতিক যাত্রাও বলা যেতে পারে। বাংলায় যে গণতন্ত্র নেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দলের স্বৈরাচারী শাসন চলছে তা নিয়ে মানুষের জ্ঞান-চোখ খুলে দিতেই উত্তর থেকে দক্ষিণে রথ নিয়ে বেরোনোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। বিজেপি-ও চায় যে যাত্রা শান্তিপূর্ণ হোক।”
রাজ্য বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, আদালতের সবিস্তার রায় হাতে পেলে তা নিয়ে সন্ধ্যায় আলোচনায় বসা হবে। এ ব্যাপারে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ-র সঙ্গে কথা বলবেন। তার পর অমিত শাহ যে দিন সময় দিতে পারবেন সে দিনই রথযাত্রার সূচনা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে প্রশাসন রথ যাত্রায় অনুমতি না দেওয়ার পরই দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন অমিত শাহ। তিনি বলেছিলেন, আদালতের উপর বিজেপি-র ভরসা ও আস্থা রয়েছে। রথযাত্রা হবেই। বাংলার গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরবে বিজেপি-র রথ।
অমিত শাহ ছাড়াও রথ যাত্রা চলাকালীন বাংলায় একাধিক জনসভা করারও কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।
হাইকোর্টের রায় নিয়ে তৃণমূল অবশ্য দলীয় ভাবে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। সরকার হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাবে কিনা তাও এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ঘরোয়া আলোচনায় দলের একাধিক নেতা বলেন, বাংলায় কোনও দলকে রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করতে কখনও বাধা দেয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। কিন্তু বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি করার জন্যই রথ নিয়ে বেরোতে চাইছে বিজেপি। তাতে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল প্রশাসনের। সেই কারণেই ওদের রথযাত্রায় আপত্তি জানিয়েছিল পুলিশ ও প্রশাসন।
Be the first to comment