নানা রকম কর এবং ডিলারকে কমিশন দিতেই পেট্রল-ডিজেলের দাম অনেকখানি বেড়ে যায়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শিবপ্রতাপ শুক্লা লোকসভায় লিখিতভাবে জানিয়েছেন, কোনও কর বা ডিলারের কমিশন না দিলে রাজধানী দিল্লি ও তাঁর আশপাশে এক লিটার পেট্রলের দাম হবে ৩৪.০৪ টাকা। ডিজেলের দাম হবে ৩৮. ৬৭ টাকা। পেট্রোল যে দামে বাজারে বিক্রি হয়, তাঁর মধ্যে ৯৬.৯ শতাংশ আছে কর ও কমিশন। ডিজেলের ক্ষেত্রে বাজার দরের ৬০.৩ শতাংশ নেওয়া হয় কর ও কমিশন বাবদ।
গত ১৯ ডিসেম্বর খুচরো বিক্রিতে এক লিটার পেট্রলের দাম ছিল ৭০.৬৩ টাকা। তাঁর মধ্যে কেন্দ্রীয় শুল্ক বাবদ দিতে হয়েছিল ১৭.৯৮ টাকা, ভ্যাট বাবদ ১৫.০২ টাকা এবং ডিলারের কমিশন ৩.৫৯ টাকা।
ডিজেলের ক্ষেত্রে খুচরো বিক্রিতে দাম ছিল লিটার পিছু ৬৪. ৫৪ টাকা। তাঁর মধ্যে কেন্দ্রীয় শুল্ক ছিল ১৩.৮৩ টাকা, ভ্যাট ৯.৫১ টাকা এবং ডিলারের কমিশন ২.৫৩ টাকা। পেট্রল ও ডিজেলের দাম এখন বাজার নিয়ন্ত্রিত। প্রতিদিনই ওই দুই জ্বালানির দাম বাড়ে-কমে।
জ্বালানির দাম দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৃথক হয়। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি আলাদাভাবে জ্বালানির ওপরে ভ্যাট আরোপ করে। তাই দামের হেরফের ঘটে।
অপর একটি প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত আর্থিক বছরে কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রলের ওপরে ৭৩,৫১৬.৮ কোটি টাকা শুল্ক আদায় করেছিল। ডিজেলে আদায় করেছিল ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ছয় মাসে পেট্রলের শুল্ক আদায় হয়েছে ২৫৩১৮.১ কোটি। ডিজেলের শুল্ক মিলেছে ৪৬,৫৪৮.৮ কোটি টাকা।
গত অক্টোবরে পেট্রল ও ডিজেলের মূল্য কমানোর জন্য সরকার শুল্ক কমিয়ে দেয়। এর ফলে আর্থিক বছরের বাকি দিনগুলিতে সরকারের লোকসান হচ্ছে ৭ হাজার কোটি টাকা।
২০১০ সালে পেট্রলের দাম বিনিয়ন্ত্রণ করে সরকার। ডিজেলের দাম বিনিয়ন্ত্রণ করা হয় ২০১৪ সালে। এখন তেল বিপণন সংস্থাগুলি জ্বালানির দাম নির্ধারণ করে। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামের হ্রাসবৃদ্ধি এবং টাকার দামের ওপর নির্ভর করে পেট্রল ও ডিজেলের দাম।
এখন দেশে বেসরকারি ও সরকারি মিলে বেশ কয়েকটি তেল কোম্পানি আছে। বেসরকারিদের মধ্যে আছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, কায়েরন ইন্ডিয়া লিমিটেড। সরকারি সংস্থার মধ্যে আছে অয়েল ইন্ডিয়া, ওএনজিসি। কিতু তারা সবাই মিলে এদেশে প্রয়োজনীয় তেলের মাত্র ২৫ শতাংশ উৎপাদন করতে পারে। বাকি ৭৫ শতাংশ তেল আমদানি করা হয় বিদেশ থেকে।
Be the first to comment