Pritha Banerjee :
(১) দোকান বন্ধ করে জোনাকি স্কুটি নিয়ে মৌচাকের সামনে এসে দাঁড়াল। রাত্রে একটু মিষ্টির সখ অনেকদিনের। তারপর ফুল স্পীডে স্কুটি নিয়ে ঢাকুরিয়া রেল-গেটের পাশে ব্যানার্জী পাড়ায় ৫১/বি তার ‘নিরালা’-র দরজায়। এখন তার বাড়ি, বানিয়েছিল ঠাকুর্দা। পরে আধুনিক রূপ দিয়েছে বাবা। আজ একটু বেশিই দেরি হয়েছে। দূর্গাপূজোর ভিড় শুরু হয়েছে তাই রোজই এখন দেরি হবে।
বাড়ি ফিরে চান করে এক কাপ কফি নিয়ে টিভি খুলে বসা তার প্রতিদিনের অভ্যাস। তারপর খায়। সুজাতা রান্না করে রেখে যায়। পুরো ঘরটাই সুজাতার হাতে। সকালের চা থেকে শুরু করে রাতের খাওয়া পর্যন্ত। খাওয়া সেরে জল্দি শুয়ে পরল। বয়েসটা তো বাড়ছে তাই শরীরকে একটু আরাম তো দিতেই হবে। কিন্তু ফেসবুকটা না খুললে যে মনটা একটু আনচান করে। সারাদিনের পোষ্টগুলো দেখে আর কমেন্ট করে। তাছাড়া অনেকেই থাকে অনলাইন। তাদের সাথে টুকটাক গল্প ভালোই লাগে।
ইদানীং নতুন বন্ধু হয়েছে রুদ্র ভালো-নাম রুদ্রাদিত্য চ্যাটার্জী থাকে দমদমে। এক ছেলে দিল্লিতে পড়ছে। বৌ-এর কথা কিছু বলেনি জুনিও কিছু জিজ্ঞেস করেনি। জুনি জোনাকির ডাক নাম।
হোয়াটস আপ খুলতেই একরাশ মেসেজ হুমড়ি খেয়ে পড়ল। তার মধ্যে বেশিটাই রুদ্রর।
-কেমন কাটল আপনার দিন? মেসেজটা দিয়ে ফেসবুকের পাতা ওলটাতে লাগল। ফেসবুক এখন পূজ্যর গন্ধে ম ম করছে। কাশফুল, মা দুর্গার মূর্তি, নতুন শাড়ি শালোয়ার কুর্তিতে ভর্তি। তার সাথে নিত্য নতুন কসমেটিকস আর ফ্যাসানেবল জুয়েলারি।
-আজ এতো রাত কেন আপনার? আবার রুদ্রর মেসেজ ঢুকছে।
-পূজ্যর ভিড়।
-আপনি কটা শাড়ি কিনলেন?
-পূজো বলে স্পেশাল কিছু কিনিনা।
-জিজ্ঞেস করতে পারি কেন?
-ইচ্ছে করে না। আপনি পূজোয় কি করছেন?
-আপনার সাথে পূজো দেখার ইচ্ছে।
-তাহলে আর পূজো দেখা হলনা আপনার।
-জানেন-তো একটু জেদি আমি। এই পূজো আপনার সাথেই দেখব আমি। তবে আর রাত নয় শুয়ে পড়ুন।
জুনিরও খুব ঘুম পাচ্ছে তাই শুভ-রাত্রি জানিয়ে ফোন অফ করল। কসমেটিক্সের দোকান তাই পূজ্যর জন্য ভিড় খুব। সারাদিন পরিশ্রমের পর তাই রাতে আর কথা বলতে ভালো লাগেনা।
২য়
মহালয়ার পরের দিন বেলা প্রায় সাড়ে এগারটায় টুংটাং করে ফোনটা বেজে উঠল।
-হ্যালো…..
-আছেন তাহলে।
-ঠিক চিনলাম-না!
– আমি রুদ্র, কেমন চমকে দিলামতো!
-ও, চমকাবার কি আছে? আর পূজোর সময় থাকবনা তো যাবো কোথায়?
-আমি ভাবলাম হার চুড়ি নিয়ে হয়তো গিয়েছেন মা দূগ্গা কে সাজাতে সেই কৈলাসে।
-এমন মনে হওয়ার কারন?
-কদিন পড়তে পারছিনা আপনাকে তাই খোঁজ করছিলাম।
-বেশ নতুন কথা ‘পড়তে পারছিনা’। এখন রাখছি ভীষণ ব্যস্ত।
-ফ্রি হলে ফোন করবেন, কিছু জিনিস কিনব আপনার দোকান থেকে।
-কি করবেন?
-এক বান্ধবীকে গিফট করব।
কথার সাথেই ফোনটা কেটে গেল। আশ্চর্য মনটা নিয়ে জুনি ফোনটা রেখে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ল খদ্দেরের সাথে।
গড়িয়া-হাটে জুনির এই দোকান ওর বাবা করে দিয়েছে ওকে। বিয়ের এক বছরের মাথায় জুনি যখন মাতাল চরিত্রহীন স্বামীর ঘর থেকে চিরদিনের জন্য চলে এলো তখন বাবা মা প্রথমে চেয়েছিল আবার বিয়ে দিতে। কিন্তু পুরুষের যে রূপ জুনি দেখেছে তাতে বিয়েতে আর রুচি নেই। কিছুদিন চুপচাপ ঘরে বসার পর সিদ্ধান্ত নিল এমন একটা কাজ করবে যেখানে অবসরের কোনও প্রশ্ন থাকবেনা। যতদিন শরীর সাথ দেবে সে কাজ করবে। অনেক চিন্তা ভাবনা করে ঠিক হল এই দোকানটার কথা। জুনির কঠোর পরিশ্রমের ফসল এই দোকান। কত বছর হয়ে গেল। বাবা মা ও একসময় চলে গেল। পেছনের কথাগুলো জুনির মনে একটু উদাসী হাওয়া ছড়িয়ে দিয়ে গেল। সে নিজেই এখন পঞ্চাশ পেরিয়ে গিয়েছে।
-দিদি টাকাটার চেঞ্জটা দাও, কি এতো ভাবতে শুরু করলে তুমি?
স্বাতির কথায় বাস্তবে ফিরে বলল, -কি আর ভাবব? বল কত দেব আর তুই ও তো দিতে পারিস। তুই তো জানিস তোর মতন একজনকে না পেলে আমার দোকান এত বড় হতোনা। সব কাজ কি আর একলা হয়?
সেদিন বাড়ি ফিরে সব কাজ সেরে রুদ্রকে ফোন করল,– বলুন কি ধরনের জিনিষ কিনবেন? শ্রী হরির কালেকশানটা কিন্তু সব থেকে ভালো। তবে মুখে বলে তো বোঝানো যাবেনা দোকানে আসতে হবে। যার জন্য কিনবেন তাকেও–
-একটু যদি থামেন তাহলে আমি একটু বলি।
-থামলাম।
-আমি দোকানে যাব ঠিকানাটা দিন। কখন গেলে ফ্রি পাব?
-বারোটার পর আসুন।
-বাঃ দারুণ টাইমিং তো। লাঞ্চটা তাহলে একসাথেই সারবো।
-না না তার দরকার নেই। আমি ঘরের তৈরি লাঞ্চ করতেই ভালোবাসি।
-উ,হু-হু- খদ্দেরের সম্মান এইটা, সাথে লাঞ্চ করতেই হবে। অবশ্যই সকলের জন্য নয় কারণ সবাইতো আর স্পেশাল নয়।
-আপনি বুঝি স্পেশাল? ধারনাটা কিভাবে হলো?
-সামনা সামনি লাঞ্চে বসে ডিটেলসে বলব ধারনাটা।
জুনি ভেবে পাচ্ছেনা কি বলবে। প্রোফাইল দেখেতো বেশ স্ট্যান্ডার্ড মনে হয়েছে। ট্যাক্স কনসালট্যান্ট। বৌবাজারে নিজস্ব অফিস। তাছাড়াও দুটো বড় কোম্পানির সাথে যুক্ত।
-কি হল চুপ কেন? তেমন একটা ভয়ঙ্কর বাঘ বা ভাল্লুক নই আমি যে আপনাকে আঁচড়ে কামড়ে দিতে পারি।
-বেশ জবরদস্তি তো, আমি কি তাই বলেছি? তাছাড়া কলকাতার বুকে দোকানের অভাব তো নেই। সেই দমদম থেকে এইখানে কেন আসবেন তাই তো বুঝতে পারছিনা।
–আচ্ছা সবটা একলা একলা বোঝার চেষ্টা না করে যদি আমায় কিছু সুযোগ দেন বুঝিয়ে দেবার তাহলে ???
–আশ্চর্য্য, সামান্য একটা সহজ কথা আমি যখন বুঝতে পারছি তখন কারও সাহায্য কেন নেব?
– কিছু কিছু কাজে সাহায্য নিতে হয় ম্যাডাম। যাক, আর তর্ক নয়। কাল এক সঙ্গে জমিয়ে লাঞ্চ আর আড্ডা হবে। এখন গুড নাইট।
৩য়
গুড নাইট বলে জুনিও ফোন অফ করল কিন্তু ‘কেন’ আর ‘কি জন্য’ এই দুটো প্রশ্ন জুনিকে বিরক্ত করতে লাগল। চ্যাট বা ফোন ঠিক আছে কিন্তু এই দেখা করা, খাওয়া এগুলো বরদাস্ত করা যায়না। জুনি ঠিক করল কাল পরিষ্কার জানিয়ে দেবে। কোনও রকম বিভ্রান্তির শিকার যেন না হয় ওই রুদ্র। হঠাৎ জুনি মনে মনে হেসে উঠল- ‘এই বয়সে প্রেম, ধ্যাত….’।
স্বাতিকে বলেই রেখেছিল এই স্পেশাল কাস্টোমারের কথা। ব্র্যান্ডেড আইটেম গুলো সামনেই সাজিয়ে রেখেছিল। প্রায় একটা নাগাদ ভদ্রলোক এলেন। খুবই স্মার্ট আর ফিট। মনেই হয়না রিটায়ার্ড পার্সন। প্রায় ছফুটের কাছাকাছি মেদহিন শরীর। সাদা টি-সার্ট আর নেভী ব্লু জিনসে বেশ এ্যাট্রাকটিভ লাগছে।
-মনে হচ্ছে চিনতেই পারছেননা!
-তেমন কিছু কি দেখলেন না চিনতে পারার মতো? নিজেকে চেক করে নিয়ে স্মার্টলি উত্তর জোনাকির।
-হমম, একটু অবাক মনে হল আপনাকে।
-আপনার দৃষ্টি ভঙ্গির বিভ্রাট, বলুন কি কি দেখাব? আশা করছি আপনার পছন্দ হবে।
-যা সব আইটেম আপনার কালেকশানে পছন্দ তো হবেই। তবে এত দেরি যখন হয়েছে চলুন লাঞ্চটা সেরেই আসি।
-প্লিজ আজ থাক।
-উহু, আজ আপনার সঙ্গে লাঞ্চ করব বলেই এসেছি।
স্বাতির সামনে দাঁড়িয়ে তর্ক করতে ইচ্ছে হলনা। তাই স্বাতিকে কিছু দরকারি কথা বলে বেড়িয়ে পরল।
বাইরে এসে রুদ্র গাড়ির দরজা খুলে জোনাকিকে বসতে বলল।
-গাড়ি কেন সামনেইতো রেস্তোরা আছে একটা।
-আপনার মতো সুন্দরি কে নিয়ে যা-তা জায়গায় তো যেতে পারিনা।
খুব বিরক্তির সাথে জোনাকি উঠে বসল। কিন্তু একটু পরেই রুদ্রর মনোরম ব্যক্তিত্বর কাছে বিরক্তিটা উড়ে গেল। দারুণ কথা বলেন। গাড়ি এসে দাঁড়াল বালিগঞ্জের আরসালানে।
মেনু কার্ড টা জোনাকির হাতে দিয়ে রুদ্র বলল, – আজ আপনার পছন্দের। জীবনের নিঃসঙ্গতায় আমি বিদ্ধস্থ। তাই আজ প্রায় জোর করেই বার হয়েছি একটু আনন্দ কুড়োতে।
-আমি যদি না আসতাম।
-একটা নরম মনের খোঁজ আপনার মধ্যে পেয়েছি। মনে আশা ছিল ফেরাবেননা। তবে ছবির থেকেও আপনি আরও বেশি সুন্দর। বয়সটা যেন হঠাৎ থেমে গেছে আপনার।
খুশি হলেও অস্বস্তিতে মুখ নিচু করল। তারপর বলল – আপনার কথা বলুন। মিসেস কতদিন হল মারা গেছেন?
-মারা-তো যায়নি। মাত্র এক বছরের ছেলেকে ফেলে চলে গিয়েছে নিজের এম্বিশাসকে নিয়ে। ওর কাছে আমি ব্যাক ডেটেড ছিলাম।
-বিয়ে করলেননা কেন?
-পাগল, ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায়।
কথার ধরনে জুনি হেসে ফেলল। জুনির দিকে তাকিয়ে রুদ্র বলল, – তবে আপনার মতন কাউকে পাবার জন্য বেল তলাতেই বসে থাকতে রাজি।
সেদিন খেতে খেতে রুদ্রর আগ্রহে জোনাকি বলেছিল তার ফেলে আসা দিনের কথা। রুদ্রও তার জীবনের কথা বলেছিল। ফেরার পথে দোকানের সামনে জুনিকে নামাবার আগে হাতটা বাড়িয়ে রুদ্র বলল-– কথা দিন, দোকান বন্ধর দিনগুলো আমরা একটু নিজেদের মতো করে কাটাবো। জুনি কিছু বলতে পারলনা, শুধু হাতটা রেখে দিল রুদ্রর হাতে।
সেদিন রাতে বিছানায় শুয়ে অনেক কথা হয়েছিল দুজনার। আর সেই কথার মাঝে আপনিটা কখন যে ঝড়ে গেছে তা দুজনের কেউই লক্ষ করেনি।
৪র্থ
এর মাঝে একদিন রুদ্র তার ছেলে দেবাদিত্যর সাথে আলাপ করিয়ে দিয়েছে ফোনে। কি সুন্দর কথা ছেলেটার। সি.এ পড়ছে একটাই স্বপ্ন বাবাকে আনন্দে রাখা, সুখে রাখা।
পঞ্চমীর সন্ধ্যায় রুদ্রর ফোন— আমি আসছি মৌচাকের সামনে তুমি এসো।
-এখন সম্ভব না।
-প্লিজ, পূজোর আলোয় তিলোত্তোমা কলকাতাকে দেখবে এসো। পরের চারদিন ভিড় প্রচুর বেড়ে যাবে। এই সামান্য কথাটা রাখবেনা?
-আমার নিস্তরঙ্গ জীবনে কেন তুমি ঢেউ তুলছ রুদ্র?
-ফোনে নয় সামনে বসে উত্তর দেব। আমি ওয়েট করছি।
ফোনটা রেখে জুনি চিন্তা করল দোকানে ভিড় তো এখন অনেক কম স্বাতি সামলে নিতে পারবে। তাই বেড়িয়ে পড়ল।
জোনাকি বসতেই গাড়ি এগিয়ে চলল। একটু খানি চুপ করে থেকে রুদ্র বলল – জোনাই তোমার জীবনটা মরুভূমির মতোই রুক্ষ। এতোটুকু প্রাণের স্পন্দন নেই। আমার ছেলে আছে কিন্তু তোমার?
-শেষ বয়সে ওল্ড হোমে চলে যাব। গাছের প্রতিটা ফুল কি যোগ্য সম্মান পায়? কিছু ফুল তলায় পড়ে রোদে শুকিয়ে যায়। কেউ চেয়েও দেখেনা।
-তা হতেই পারে কিন্তু আমার চোখের সামনে কোনও ফুলকে শুকোতে দেবনা। আমি তাকে আমার ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখব’। বাঁ হাতটা দিয়ে জুনির হাতটা ধরে বলল, — যেদিন তোমায় প্রথম দেখেছি জোনাই সেইদিন থেকেই তোমায় ভালোবেসেছি। সেদিনতো জানতাম-না জোনাই এতো মিষ্টি।
-বন্য ফুল ফুলদানিতে কেউ তোলেনা।
-সেতো ফুলদানির মালিকের ভাবনা, কেমন ফুল তার ভালো লাগে?
-আমরা কোথায় যাচ্ছি?
-কোথাও না শুধু ঘুরতে বার হয়েছি।
-এভাবে আমায় ডেকোনা। কোনও চেনা পরিচিতর চোখে পড়ে যাব তখন লজ্জার শেষ থাকবেনা।
-আমিতো চাইনা কোনও লজ্জায় তুমি পড়। আমরা দুজনেই জীবনের একটা লম্বা সময় নিঃসঙ্গতার অন্ধকারে পার করে এসেছি। এসো বাকি পথটা আমরা একসাথে আলোয় হাঁটি।
-তা হয়না। বিয়ে আমার কাছে বিভীষিকা। তাছাড়া বয়স আর মন কোনটাই আর নেই।
-ঠিক আছে এ নিয়ে পরে কথা হবে। তবে মনে রেখো সপ্তমী আর অষ্টমী আমরা একসাথে অঞ্জলি দেব। কলকাতা থেকে বেড়িয়ে দুর গ্রামে যাব।
-তুমি কেন বুঝতে চাইছনা?
-প্রথমেইতো বলেছি আমি জেদি আর অবুঝ।
সেদিন অনেক ঘুরে ডিনার করে প্রায় সাড়ে দশটায় ঘরে ঢুকেছিল । সপ্তমী ও অষ্টমীর দুদিনই রুদ্রর ইচ্ছেতে তারা কলকাতার সীমানা ছাড়িয়ে দুর গ্রামের পথে ঘুরেছে, ঠাকুর দেখেছে, একসাথে অঞ্জলি দিয়েছে। নবমীর রাত দুজনেই কথার সাগরে ডুবকি লাগিয়েছে ফোনকে সাথি করে। রুদ্রর সাথে পরিচয় যত গভীর হচ্ছে ততোই আকর্ষণ বাড়ছে। জোনাকির মন এক অদৃশ্য বাঁধনে জড়িয়ে পড়ছে রুদ্রর সাথে। জোনাকি নিজেই জানেনা কোথায় ছুটছে তার মন, আলোয় না অন্ধকারে? পরিণতি কি— ভালো না মন্দ?
দশমীর সন্ধ্যায় দেবাদিত্যর ফোন – হ্যালো, আন্টি আমি তোমাকে মা বলে দশমীর প্রণাম করতে চাই।।
-তা হয়না বাবা।
-আমি কোনোদিন মা-এর স্বাদ পাইনি। মা কেমন হয় তাই জানিনা। আমায় ফিরিয়ে দেবে আন্টি?
-আমি সমাজকে কি বলব দেব?
সমাজতো তোমায় কোনোদিন কিছু দেয়নি আন্টি শুধুই নিয়েছে। কিন্তু এই ছেলে তোমায় বিরাট ধন সম্পত্তি-তো দিতে পারবেনা তবে হাসি খুশি সুখ আনন্দের ছোটো ছোটো কণা দিয়ে তোমায় ভরে রাখবে।
-জীবনে আমি একবার ঘা খেয়েছি। তখন বাবা-মা ছিল তারা বাঁচিয়েছিল আমায় সেই দুর্যোগ থেকে কিন্তু এখন একলা।`
-এখন তোমার ছেলে আছে। এই দুটো বুড়ো ছেলেমেয়ের দায়িত্ব আমার। দুই পক্ষের কর্তা হয়ে কাল রেজিস্ট্রি অফিসে তোমাদের নাম লিখিয়ে আসব।
স্তব্ধ জোনাকি ভাবল সত্যিই কি তার মিটমিটে আলো কোনও সংসারকে আলোকিত করতে পারে?
Be the first to comment