অগুস্তা ঘুষ কাণ্ডে অভিযুক্ত ব্রিটিশ দালাল ক্রিশ্চিয়ান মিশেল জেরার মুখে পড়ে সোনিয়া গান্ধীর নাম মুখে এনেছেন বলে দাবি করলো এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। মিশেলকে গত মাসে দুবাই থেকে প্রত্য়পর্ণ করে দেশে এনেছে মোদী সরকার। তার পর থেকে সে সিবিআই হেফাজতে ছিল। পরে তাকে হেফাজতে নেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। শনিবার তাকে ফের দিল্লির এক আদালতে পেশ করা হলে এ বার আরও কয়েক সপ্তাহের জন্য তাকে হেফাজতে চাইল ইডি।
আদালতে ইডি কর্তারা বলেছেন, ইতিমধ্যে মিশেলকে তাঁরা জেরা করেছেন। জেরার সময় সোনিয়া গান্ধীর নাম বলেছে সে। সেই সঙ্গে ‘ইতালীয় মহিলার ছেলে-র’ কথাও বলেছে মিশেল। সন্দেহ নেই ইতালীয় মহিলার ছেলে বলতে রাহুল গান্ধীকেই বোঝাতে চাওয়া হয়েছে। এ দিন আদালতে ইডি-র তরফে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সময় ফোনে কথোপকথনে মিশেল বারবার ‘R’ নামে এক জনের কথা বলেছে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, এখন খুঁজে বের করতে হবে সেই ‘R’ কে?
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট মন্ত্রী, দেশের রাষ্ট্রপতির মতো ভিভিআইপি-দের দেশের মধ্যে সফরের জন্য মনমোহন সিংহ জমানায় ১২টি হেলিকপ্টার কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এ ব্যাপারে অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড নামে একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হয়। কিন্তু পরবর্তী কালে অভিযোগ ওঠে ওই প্রতিরক্ষা চুক্তিতে ঘুষ দেওয়া হয়েছে। এর পর মনমোহন জমানাতেই চুক্তিটি বাতিল করে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই তদন্ত এখনও চলছে।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, ক্রিশ্চিয়ান মিশেলকে দুবাই থেকে প্রত্যর্পণ করার পর দিন রাজস্থানে প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, “আজকের খবরের কাগজ পড়েছেন তো! হেলিকপ্টার কেলেঙ্কারিতে একটা দালালকে ধরে এনেছি। এই রাজদারকে (যিনি রহস্যের হদিশ জানেন) জেরা করে দেখুন না কত নামদারের নাম বেরিয়ে পড়ে!” অনেকের মতে, তখনই বোঝা গিয়েছিল এ ব্যাপারে সরকারের উদ্দেশ্য কী?
যদিও বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। তবে দলের এক মুখপাত্র বলেন, রাফাল দুর্নীতি আড়াল করে জোর করে এখন কংগ্রেস তথা গান্ধী পরিবারের উপর কালি ছেঁটাতে চাইছেন মোদী। কিন্তু তা মানুষের কাছে আর বিশ্বাসযোগ্য হবে না। আর জোর করে কাউকে দিয়ে কিছু বলিয়ে নিয়েও কিছু প্রমাণ করা যাবে না। ভুলে গেলে চলবে না রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে বফর্স কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি-ও। কিন্তু অতীতে বাজপেয়ী জমানায় বা এখন মোদী জমানায় তা প্রমাণ করে দেখাতে পারেনি। আর অগুস্তার কাণ্ডে তো মনমোহন সরকারই তদন্ত শুরু করেছিল। বুজরুকি দিয়ে আর মানুষকে বোকা বানানো যাবে না।
Be the first to comment