প্রয়াত অভিনেতা কাদের খান

Spread the love

প্রয়াত অভিনেতা কাদের খান। কানাডার এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিলো ৮১ বছর। ডায়াবেটিস-সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। ভুগছিলেন নিউমোনিয়াতেও। সম্প্রতি শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে স্পেশাল ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।

বলিউড থেকে বিদায় নিয়েছেন অনেক দিন আগেই। তাঁর অভিনীত শেষ ছবি ‘হো গ্যায়া হ্যায় দিমাগ কা দহি’। অভিনেতার ছেলে সরফরাজ জানিয়েছেন, হাঁটুর সমস্যা কাবু করে ফেলেছিল তাঁকে। কানাডায় ছেলে ও পূত্রবধূ সহিষ্ঠার সঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের জন্য তাঁকে ভর্তি করা হয় হরিদ্বারের বাবা রামদেব আশ্রমে। অস্ত্রোপচার সফল হলেও হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হত প্রবীণ অভিনেতার। ডায়াবেটিসেও আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।

সরফরাজ জানিয়েছেন, গত কয়েক মাসে কাদেরের শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হচ্ছিল। শ্বাসকষ্ট বেড়েছিল সাঙ্ঘাতিক ভাবে। নিউমোনিয়ার লক্ষণও ধরা পড়ে। প্রথমে সাধারণ ভেন্টিলেশনে রাখা হলেও, বর্তমানে তাঁকে বিশেষ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।

হাঁটাচলা করার ইচ্ছাও নাকি ক্রমশ চলে যাচ্ছিল ৮১ বছরের অভিনেতার। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁর ছেলে। হাঁটতে গেলেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতেন তিনি। স্মৃতিশক্তিও লোপ পেতে বসেছিল। চিকিৎসকরা জানান, ‘প্রোগ্রেসিভ সুপ্রানিউক্লিয়ার পলসি’ (PSP)-এর উপসর্গ দেখা দিচ্ছিল ক্রমশ। এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগী শরীরের ভারসাম্য রাখতে পারেন না, হাঁটার গতি কমতে থাকে, চোখের সমস্যা দেখা দেয়, চিন্তাশক্তি ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

১৯৩৭ সালের ২২ অক্টোবর কাবুলে জন্ম অভিনেতা কাদের খানের। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে প্রথমে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। পাশাপাশি থিয়েটারের জন্য স্ক্রিপ্ট লিখতেন, অভিনয়ও করতেন। রূপোলি জগতে প্রবেশ অভিনেতা দীলিপ কুমারের হাত ধরে। হিন্দি ও উর্দু মিলিয়ে তিনশোরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন কাদের। ১৯৭৩ সালে রাজেশ খন্নার সঙ্গে তাঁর প্রথম অভিনীত ছবি ‘দাগ’। ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত একাধিক বলি ছবিতে স্ক্রিন রাইটারের কাজ করেছেন তিনি। রাজেশ খন্না, জীতেন্দ্র, অমিতাভ বচ্চন থেকে অনীল কপূর, গোবিন্দা, হালে সলমন খান, অর্জুন কপূর— বলিউডের প্রায় সমস্ত অভিনেতার সঙ্গেই তাঁর কাজ করার রেকর্ড রয়েছে।

২০১৫ সালে বলিউড থেকে বিদায় নিলেও লেখক হিসেবে ফিরে আসার ইচ্ছে ছিল অভিনেতার। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘অসুস্থ হওয়ার পর থেকে কোনও পরিচালক ও প্রযোজক আমার সঙ্গে কাজ করতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাই ভবিষ্যতে লেখক হিসেবেই ফিরে আসতে চাই। আমার স্ক্রিপ্ট পড়ে দর্শকরা আবার মুগ্ধ হবেন আমি আশা রাখি।’

অমিতাভ বচ্চন শুক্রবার টুইট করে কাদের খানের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন৷ অমিতাভ টুইটারে লেখেন, ‘কাদের খান একজন অসাধারণ প্রতিভা৷ হাসপাতালে রোগশয্যায়৷ ওঁকে স্টেজে পারফর্ম করতে দেখেছি, দেখেছি সিনেমার অনবদ্য স্ক্র‌িপ্ট লেখার দক্ষতা৷ দারুণ বন্ধ‌ু৷ অনেকেই জানেন না উনি এক সময় অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন৷’
 
কাবুলে জন্মগ্রহণ করেন কাদের খান৷ ১৯৭৩ সালে রাজেশ খান্নার সঙ্গে ‘দাগ’ ছবিতে বলিউডে ডেবিউ৷ ৩০০ ছবিতে কাজ করেছেন তিনি৷ এছাড়াও ২৫০টি ছবির সংলাপ লিখেছেন৷
 
 
 
 

 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*