চলতি বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম হার। দীর্ঘ ২৭ বছর পর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারলো কোহলি অ্যান্ড কোং। সাত ম্যাচে ১ পয়েন্ট পেয়ে তালিকায় দুই নম্বরে থাকলেও মিডল অর্ডার অধিনায়ক বিরাট কোহলির কপালে এই পারফর্মেন্স যথেষ্ট ভাঁজ ফেলবে। রবিবার ভারতের বিরুদ্ধে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান। মাস্ট-উইন ম্যাচে প্রথম থেকেই ধরে খেলতে শুরু করেন ইংল্যান্ডের ওপেনাররা। ১০ ওভারে ৪৭ রান করে রয় ও বেয়ারস্টো জুটি। এরপরই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন তাঁরা। ১১ তম ওভারের পঞ্চম বলে পুল করতে গিয়ে ব্যর্থ হন রয়। তা ধোনির গ্লাভসে জমা পড়ে। হার্দিক পান্ডিয়া আউটের আবেদন করলেও আম্পায়ার আঙুল তোলেননি। অন্যদিকে ডিআরএসও নেয়নি ভারত। পরে রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাটে বল লেগেছিল।
এরপর আরও আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে ইংল্যান্ড। ১৬ তম ওভারে ১০০ রানের গণ্ডি টপকায় তারা। ছয় মেরে হাফ সেঞ্চুরি করেন বেয়ারস্টো। পরের ওভারেই হাফ সেঞ্চুরি করেন রয়। তাঁদের সামনে ভারতের দুই স্পিনার যুজবেন্দ্র চহ্বাল ও কুলদীপ যাদবকেকে রীতিমতো অসহায় লাগছিল। শেষপর্যন্ত ২২.১ ওভারে রয়কে আউট করেন কুলদীপ। লং অন থেকে দৌড়ে এসে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন রবীন্দ্র জাদেজা। ৬৬ রান করেন রয় । ক্রিজে আসেন জো রুট। রুটের সঙ্গে নিজের আক্রমণাত্মক ছন্দ ধরে রাখেন বেয়ারস্টো। পান্ডিয়ার বলে এক রান নিয়ে চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম শতরান পূরণ করেন ইংল্যান্ড ওপেনার।
৩০ তম ওভারে ২০০ রান পার করে ইংল্যান্ড। ৩১.৪ ওভারে বেয়ারস্টোকে আউট করেন শামি। নিজের পরের ওভারেই মর্গ্যানকে প্যাভিলিয়নে পাঠান তিনি। এরপর ইংল্যান্ডের ইনিংসের হাল ধরেন স্টোকস ও রুট। রুটকে আউট করে সেই জুটি ভাঙেন শামি। তখন ইংল্যান্ডের স্কোর ৪৪.১ ওভারে ২৭৭/৪ । ইতিমধ্যে ৩৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন স্টোকস। ৪৭ তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে বাটলার শামিকে যথাক্রমে চার ও ছয় মারেন। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ৩৩৭ রান তোলে ইংল্যান্ড। ৫৪ বলে ৭৯ রান করেন স্টোকস। ১০ ওভারে ৬৯ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন শামি। পাটা পিচে দুরন্ত বল করেন যশপ্রীত বুমরা। ১০ ওভারে মাত্র ৪৪ রান দিয়ে এক উইকেট নেন তিনি। অন্যদিকে, চহ্বাল ১০ ওভারে ৮৮ রান দেন।
এদিকে রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই কেএল রাহুলকে হারায় ভারত। ইংল্যান্ড বোলারদের দুরন্ত বোলিংয়ের সামনে ধরে খেলতে থাকেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। তবে এদিন হাফ সেঞ্চুরি করেন বিরাট-রোহিত। দুজনকে যখন ক্রিজে জমাট লাগছিল তখন আউট হন বিরাট। তখন ভারতের স্কোর ১৪৬/২ । চলতি বিশ্বকাপে পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরি হয়ে গেল বিরাটের। তবে এর একটি সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে না পারার বিষয়টি নিশ্চয়ই ভাবাবে বিরাটকে। তাঁর পর ক্রিজে আসেন ঋষভ পন্থ। কিন্তু, তিনি একেবারেই ছন্দে ছিল না। রোহিত দায়িত্ব নিয়ে খেলতে থাকেন। ১০৬ বলে চলতি বিশ্বকাপের তৃতীয় শতরান করেন। কিন্তু, ১০২ রানেই আউট হন রোহিত।
এরপর হার্দিক পান্ডিয়া কিছুটা চেষ্টা করলেও বাকিদের থেকে ন্যূনতম সাহায্য পাননি। পন্থ আউট হওয়ার ধোনি আসেন। পান্ডিয়ার সৌজন্যে কিছুটা হলেও ম্যাচে ছিল ভারত। তাঁর আউট হওয়ার ভারতের আশা কার্যত শেষ হয়েও যায়। শেষের দিকে ধোনি ও কেদার যাদব যেভাবে ব্যাট করলেন তা নিয়ে বিরাটদের নতুন করে আলোচনায় বসতে হবে বলে অভিমত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের।
শেষপর্যন্ত এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩১ রানে হারে বিরাট বাহিনী। এর ফলে, বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা কার্যত শেষ হয়ে গেলো।
Be the first to comment