উদ্ধার হলো CCD-এর কর্ণধার সিদ্ধার্থর মৃতদেহ, শোকপ্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Spread the love

অবশেষে নিখোঁজ হওয়া CCD-র প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার ভি জি সিদ্ধার্থর মৃতদেহ উদ্ধার হলো। বেঙ্গালুরু থেকে ৩৭৫ কিলোমিটার দূরে ম্যাঙ্গালোরে নেত্রবতী নদীতে তল্লাশি চালিয়ে দেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভারতের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ও কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণর জামাই নিখোঁজ ছিলেন সোমবার থেকেই। সেদিন ম্যাঙ্গালোরে নেত্রবতী নদীর ব্রিজে হঠাৎই কারও সঙ্গে কথা বলতে বলতে গাড়ি থেকে নেমে যান তিনি। এরপর আর ফিরে আসেননি। ফোনও বন্ধ থাকায় তাঁর চালক তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে পারেনি। তারপরেই পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানান চালক ৷ জানানো হয় পুলিশকেও ৷ এরপরই খোঁজ শুরু হয় তাঁর। তল্লাশি চালাতে নদীতে নামানো হয় বোট।

এরই মাঝে মঙ্গলবার পুলিশি তল্লাশিতে সামনে আসে কর্মচারী ও বোর্ড মেম্বারদের উদ্দেশ্যে লেখা সিদ্ধার্থর একটি চিঠি। তাতে লেখা, আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছি। অনেক দিন ধরে লড়াই করেছি। কিন্তু আজ আমি ছেড়ে দিলাম। আপনাদের প্রত্যেকের কাছে আমার অনুরোধ, নতুন ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে এই ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যান ৷ শক্ত থাকুন ৷ আমার টিম, অডিটর ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট আমার আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কিছু জানেন না। কিন্তু কাউকে ঠকানোর কোনও ইচ্ছে বা উদ্দেশ্য আমার ছিল না৷ একজন উদ্যোগপতি হিসেবে আমি ব্যর্থ ৷ পাশাপাশি আয়কর দপ্তরের DG তাঁকে চাপে রেখেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

পুলিশ আগের থেকেই অনুমান করে যে সিদ্ধার্থ হয়তো মারাত্মক কোনও পথই বেছে নিয়েছেন ৷ কারণ উদ্ধারকারী বোট, ডগ স্কোয়াড, ডুবুরি প্রত্যকের সাহায্যে কর্নাটকের সেই এলাকাটি তন্নতন্ন করে খুঁজেও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জামাইয়ের খোঁজ মেলেনি ৷ এরই মধ্যে স্থানীয় দুই বাসিন্দার বয়ানে পুলিশের সেই অনুমান আরও বদ্ধপরিকর হয়। মঙ্গলবার তল্লাশি চালোনোর সময় নেত্রবতী নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকার এক মৎস্যজীবী জানিয়েছিলেন, সোমবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ এক ব্যক্তিকে উল্লালা সেতু থেকে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখেন তিনি। ঘটনাটি দেখেই তিনি ছুটে বাঁচাতে যান। কিন্তু ওই ব্যক্তি ঝাঁপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এত গভীরে চলে যান, তাঁর কাছে পৌঁছানো যায়নি ৷ যদিও ৬৫ বছরের এই মৎস্যজীবী জানাতে পারেননি ওই ব্যক্তি আসলে কে? এরপর অপর এক ব্যক্তিও কাউকে নেত্রবতী নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখেছেন বলে দাবি করেন ৷

এদিকে ঘটনার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিদ্ধার্থের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘এজেন্সি দিয়ে ব্যবসায়ীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। যার ফলে দেশ ছাড়ছেন বহু ব্যবসায়ী। রাজনৈতিক স্বার্থে হেনস্থা করে ব্যবসায়ীদের চাপে রাখা হচ্ছে।

মমতা আরও বলেন, আমি বিভিন্ন সোর্স থেকে শুনেছি যে দেশের শিল্পপতিরা চাপের মধ্যে আছেন । তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ দেশ ছেড়ে চলে গেছেন এবং কেউ কেউ চলে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন । সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি হর্স ট্রেডিং ও হয়রানির ভয়ে রয়েছে ।” মমতার দাবি, “একদিকে, দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ৫.৮% হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা গত ৫ বছরে সর্বনিম্ন । এবং বেকারত্ব গত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে । অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার BSNL, এয়ার ইন্ডিয়া থেকে রেল, চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস থেকে অ্যালোয় স্টিল প্ল্যান্টসহ আরও প্রায় ৪৫টি সরকারি সংস্থাকে বেসরকারিকরণে উদ্যোগ নিচ্ছে । সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় সামগ্রিক অর্থনীতির অবস্থা খারাপ।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “শিল্প, কৃষি এবং কর্মসংস্থান আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ । এটা সঠিক না হলে অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে না । ফলস্বরূপ, আরও বেশি লোক বেকার হয়ে উঠবে । সরকারের কাছে আমার আবেদন শান্তিপূর্ণ উপায়ে কাজ করতে হবে যাতে জনগণ আত্মবিশ্বাসী হয় । এটাও দেখতে হবে যাতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং এজেন্সিগুলি দেশের ভবিষ্যৎ ধ্বংস না করে ।”


দেখুন!

https://www.facebook.com/MamataBanerjeeOfficial/posts/2603989656335026

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*