দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে বন্যায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৭৩ জনের। বন্যায় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য কেরালা। সেখানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৬ । নিখোঁজ ৫২ জন। দেড় লাখ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ওয়াইনাড, কান্নুর ও কাসারগদ জেলাগুলিতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সেখানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ছ’টি জেলায় জারি হয়েছে অরেঞ্জ অ্যালার্ট। তবে রবিবার দুপুর থেকে ফের বিমান চলাচল চালু হয়েছে কোচি বিমানবন্দরে।
এই পরিস্থিতিতে রবিবার রাহুল গান্ধী নিজের লোকসভা কেন্দ্র ওয়াইনাডে পৌঁছন দু’দিনের সফরে। সেখানে বন্যা দুর্গতদের পর্যাপ্ত ত্রাণ ও সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি। রাহুল নীলাম্বুর, মামপাদ, এডাভান্নাপ্পাদার ত্রাণ শিবিরগুলো ঘুরে দেখেন। মালাপ্পুরামের জেলাশাসকের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠকও করেন। পরে তিনি টুইটারে লেখেন, ওয়াইনাডের মানুষ যা হারালো তা হৃদয়বিদারক। ফের তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাধ্যমতো চেষ্টা করবো। পাশাপাশি তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বন্যা নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেছি।
কেরালা ছাড়া মহারাষ্ট্র, গুজরাত ও কর্নাটকের বন্যা পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। ঘরছাড়া হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। ইতিমধ্যেই বন্যা বিপর্যস্ত এলাকাগুলিতে আকাশপথে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে বায়ুসেনা ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল। জলমগ্ন গ্রামগুলি থেকে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করা হচ্ছে বাসিন্দাদের। এই তিন রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৯৭।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গতকালই কর্নাটকে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন কর্নাটকের বেলাগাভি জেলার পরিস্থিতি আকাশপথে খতিয়ে দেখেন তিনি। মুম্বই-বেঙ্গালুরু জাতীয় সড়ক বন্যার জন্য বন্ধ থাকলেও আজ তা খুলতে পারে বলে খবর। এদিকে UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট প্রাচীন হাম্পি জলের তলায়। কর্নাটকে এরই মধ্যে ১৪১০ কিলোমিটার রাস্তা খতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে চার হাজারের বেশি বাড়ি। মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা জানিয়েছেন, বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ইতিমধ্যেই ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। কর্মাটকে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩১।
মহারাষ্ট্রেও বন্যার প্রকোপে চার লাখেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া। প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ৩৫ জন। তবে পশ্চিম মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কর্নাটকের কৃষ্ণা নদীর উপরে আলমাটি বাঁধ থেকে পাঁচ লাখ কিউসেক জল ছাড়ার ফলে জলের স্তর নামার আশা করা হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গুজরাতে বিভিন্ন জায়গা ৷ সৌরাষ্ট্র অঞ্চল থেকে ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে ৷
Be the first to comment