বন্যা বিপর্যস্ত দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে মৃতের সংখ্যা ছাড়ালো ২০০। বন্যায় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য কেরালা। সেখানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮। নিখোঁজ আরও ৪০। দেড় লাখ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ওয়ানাড, কান্নুর ও কাসারগদ জেলাগুলিতে এখনও রেড অ্যালার্ট জারি রয়েছে। এদিকে উদ্বেগ বাড়িয়ে আবহওয়া দপ্তর কেরালায় আজও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসের কথা জানিয়েছে।
তবে কেরালা ছাড়াও মহারাষ্ট্র, গুজরাত ও কর্নাটকের বন্যা পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। কর্নাটক, মহারাষ্ট্রে মঙ্গল ও বুধবার অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। বন্যা, ভূমিধসের পাশাপাশি বজ্রপাতও গতকাল একাধিক জনের প্রাণ কেড়েছে। ঘরছাড়া হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। ইতিমধ্যেই বন্যা বিপর্যস্ত এলাকাগুলিতে আকাশপথে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে বায়ুসেনা ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল। জলমগ্ন গ্রামগুলি থেকে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করা হচ্ছে বাসিন্দাদের। এই তিন রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ১২২।
তবে, নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যাপরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কর্নাটকে । তবে সেখানেও মৃতের সংখ্যা ৪৮। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কর্নাটকে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন কর্নাটকের বেলাগাভি জেলার পরিস্থিতি আকাশপথে খতিয়ে দেখেন তিনি। মুম্বই-বেঙ্গালুরু জাতীয় সড়ক বন্যার জন্য বন্ধ থাকলেও আজ তা খুলতে পারে বলে খবর।
এদিকে UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট প্রাচীন হাম্পি জলের তলায়। কর্নাটকে এরই মধ্যে ১৪১০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে চার হাজারের বেশি বাড়ি। মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা জানিয়েছেন, বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ইতিমধ্যেই ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। সরকারের তরফে বন্যা দুর্গতদের ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যায় বাড়ি ভেঙে গেছে এমন দুর্গতদের সরকার ৫ লাখ টাকা করে দেবে।
এদিকে মহারাষ্ট্রেও বন্যার প্রকোপে চার লাখেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া। প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ৪৩ জন। তবে পশ্চিম মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও সেই রাজ্যে বন্যায় বিপর্যস্ত গ্রামের সংখ্যা ৭৬১টি। কর্নাটকের কৃষ্ণা নদীর উপরে আলমাটি বাঁধ থেকে পাঁচ লাখ কিউসেক জল ছাড়ার ফলে জলের স্তর নামার আশা করা হচ্ছে।
এদিকে ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গুজরাতের বিভিন্ন জায়গা ৷ সৌরাষ্ট্র অঞ্চল থেকে ৩১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে ৷ জলমগ্ন গ্রামগুলি থেকে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করা হচ্ছে বাসিন্দাদের। গুজরাতের কচ্ছ থেকে ১২৫ জনকে উদ্ধার করেছে ভারতীয় বায়ুসেনার উদ্ধারকারী দল। অন্য এলাকাতেও উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে বায়ুসেনা।
Be the first to comment