বিশেষ প্রতিনিধিঃ তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ডাকে ধর্মতলায় মেয়ো রোডে সংহতি দিবস পালিত হলো। প্রধান বক্তা ছিলেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে নেত্রী আসার আগেই সমাবেশে সুর বেঁধে দেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, এটি সাম্প্রতিককালের নজির বিহীন সভা। নিজস্ব বাচনভঙ্গীতে অভিষেক বলেন, আমরা কর্মীসভা ডাকলে তা হয় জনসভা আর অন্যরা জনসভা ডাকলে তা হয় কর্মীসভা। বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন আপনাদের বুকে পাটা থাকলে ৪৮ ঘন্টার ব্যবধানে এইরকম সভা করে দেখান। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম ক্ষমতা থাকলে এইরকম ভিড় করুন জনসভায় তারপর আঙুল দেখাবেন আমাদের।
এরপর সরকারের উন্নয়নকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে রাজ্য সরকারের তুলনা করে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে অভিষেক বলেন, মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বাধিণ সরকার যা কথা দিয়েছিল তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। অন্যদিকে বিজেপি সরকার শুধুই ফাঁকা আওয়াজ করেছে। আচ্ছে দিনের কথা বলে বিজেপি কেন্দ্রে সরকারে এসেছিল। কোথায় আচ্ছেদিন? অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুতের পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছেন। দুর্ণীতি প্রসঙ্গেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেখিয়ে অভিষেক বলেন আমরা সুদীপ্ত সেনকে কাশ্মির সীমান্তে কার্গিল থেকে গ্রেপ্তার করে এনেছি। অন্যদিকে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্ণীতি থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্র সরকার বিজয় মালিয়াকে গ্রেপ্তার করতে পারছে না। কন্যাশ্রী প্রকল্প নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে পুরস্কৃত হয়ে বিশ্ববন্দিত হয়েছে। অন্যদিকে সেই নেদারল্যান্ডসে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটা সাইকেল ছাড়া কিছু আনতে পারেননি।
এরপর সুর আরো চড়িয়ে অভিষেক বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবর্তনের সরকার করে উন্নয়নের মাধ্যমে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই এই পরিবর্তনেরও পরিবর্তন চায়। কে পরিবর্তন ঘটাবেন যিনি কোনোদিন লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে জিতে আসতে পারেননি। তার নাম মুখে এনে আমি নিজেকে কলুষিত করতে চাইনা। বিজেপিতে ইনি নতুন এসেছেন। অথচ এসেই গেলো গেলো রব করছেন। আমি বলি ইনি ওঁদের সাংসদ রূপা গাঙ্গুলীর পুরুষ সংস্করণ।
নাম না করে মুকুল রায়কে চ্যালেঞ্জ করে অভিষেক বলেন ২৯৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে একটা জেতার ক্ষমতা যদি থাকে তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো। এরপর সামনে হতে চলা পঞ্চায়েত নির্বাচণে প্রত্যেক জেলা পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে একথা বলেন যুব নেতা অভিষেক। গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমীতি সব ক্ষেত্রেই তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে বলে জানান অভিষেক।আবারও নাম না করে মুকুল রায়ের নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি নিয়ে কটাক্ষ করেন অভিষেক। বলেন, আমরা উন্নয়নের পরিষেবা মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছি। আর এরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কি প্রতিদ্বন্ধিতা করবে, একটা পুরসভার ভোট জিতে দেখাক দেখি। আর ওদের দলের কিছু গামছা নেতা রয়েছে। ওরা গলায় গামছা দেয় কারণ হেরে গিয়ে চোখের মুছতে মুছতে বিদায় নেবেন। এঁরা নিজে কোনোদিন লড়াই সংগ্রাম আন্দোলন করেনি, লক্ষ্যহীন, উদ্দেশ্যহীন কিছু মানুষ।
এরপর তরুন তুর্কী নেতা অভিষেক বলেন ৭২ থেকে ৭৭ সিদ্ধার্থ সরকারের রাজত্বের পরে ৩৪ বছর সিপিএম ক্ষমতায় ছিল। আর সিপিএম-এর ৩৪ বছরের অপদার্থতার ফলে তৃণমূল কংগ্রেস আগামী ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলার মানুষ নয়নের মণি করে রাখবেন।
সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে অভিষেক বলেন, আসুন আমরা নতুন করে অঙ্গীকারবদ্ধ হই, শপথ নিই বিরোধীদের কুৎসা, অপপ্রচারের জবাব দিই। আগে যারা সিপিএম-এর হার্মাদ ছিল তারাই এখন বিজেপির জল্লাদ, ঠিক যেমন নতুন প্লেটে বাসি পচা খাবার। এদের যোগ্য জবাব দিতে হবে। ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে গণতান্ত্রিকভাবে জনতার দরবারে মানুষকে সংঘবদ্ধ করে আমরা এদের বিরুদ্ধে কড়া ভাবে লড়বো।
Be the first to comment