দার্জিলিংয়ের আইনশৃঙ্খলা মুখ থুবড়ে পড়েছে। সর্বত্র চলছে পুলিশের গুন্ডারাজ। ধমকে, চমকে, মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে আমজনতাকে জেলে ঢোকানো হচ্ছে। জেলাবাসী আতঙ্কে। এইসব অভিযোগ নিয়ে মঙ্গলবার রাজ্যপালের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নালিশ জানালো বিরোধীরা। দার্জিলিং সফরে এদিন মেয়র, সাংসদ, বিধায়কদের নিয়ে স্টেট গেস্ট হাউজে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাম পরিচালিত শিলিগুড়ি পৌরনিগমের মেয়র তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য, দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত, মাটিগাড়া নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শংকর মালাকার, বাম পরিচালিত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকার সহ অনান্যরা।
এদিন প্রায় একঘণ্টার বৈঠকে রাজ্যপালের কাছে একাধিক বিষয় তুলে ধরেন বিরোধীরা। রাজ্যপাল এক এক করে প্রত্যেকের সমস্যার কথা শোনেন। সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন মেয়র, সাংসদ, বিধায়করা। রাজ্যপালের কাছে অভিযোগে করেন, তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনকালে বিরোধীদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হয় না।
এদিনের বৈঠক শেষে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত বলেন, আমরা খুব খুশি যে এতদিনে আমরা অভিভাবক পেলাম। কেন না, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তো আমাদের ঘৃণা করেন। আজ আমরা খুশি যে আমাদের অভিভাবক একঘণ্টা সময় দিয়েছেন আমাদের। আমি ওনাকে জানিয়েছি জেলার পুলিশি অব্যবস্থার কথা। জেলায় আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। পুলিশি অত্যাচার ক্রমশ বাড়ছে। মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে ভরার কাজ চলছে শুধু। নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। এই বিষয়ে অডিটের আবেদন জানিয়েছি। একইসঙ্গে পাহাড় সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের ক্ষেত্রে দ্রুত ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের কথা জানিয়েছি। কারণ GTA অবৈধভবে চলছে। আর তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় থাকলে ওই অবৈধ GTA-এর মেয়াদ ক্রমেই বাড়তে থাকবে।
অন্যদিকে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্য সরকার শিলিগুড়ি পৌরনিগমকে বাইপাস করে কাজ করে চলেছে। কখনও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তো কখনও অন্য কোন সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এই বিষয়ে রাজ্যপালকে অবগত করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা, পানীয়জলের সমস্যা, যানজট সমস্যার কথা জানিয়েছি। সরকারটা তো ওনারই (রাজ্যপাল)। তাই ওনাকে বললাম যাতে এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা যায়।
সবকিছুর পাশাপাশি প্রশাসনিক বৈঠকে বিরোধীদের আমন্ত্রণ জানানো ও অভিযোগ শুনে তা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ায় রাজ্যপালকেও অভিনন্দন জানায় বিরোধী দলগুলি। তবে এদিন রাজ্যপাল সব রাজনৈতিক দলকে বৈঠকে ডাকলেও তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ আসেননি। ছিলেন না মন্ত্রী গৌতম দেব, ছিলেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর এই ব্যবহারে অবাক রাজ্যপাল জগদপ ধনকড়।
Be the first to comment