জম্মু ও কাশ্মীর থেকে কেন্দ্র সরকার ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহলে সরব হয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু সেভাবে সাড়া পায়নি। বরং রাশিয়া, সৌদি আরব, ব্রিটেন সহ একাধিক দেশ এই ইস্যুতে ভারতকেই সমর্থন করেছে। তাই গোটা বিষয়টি নিয়ে কার্যত হতাশ ইসলামাবাদ। আন্তর্জাতিক মহলের মতে পাকিস্তানের “মিশন কাশ্মীর” ব্যর্থ হয়েছে।
আর এ নিয়ে হতাশা গোপন রাখেননি ইমরান খান। মঙ্গলবার প্রথমবার এই ইস্যুতে সংবাদমাধ্যমে ইমরান নিজের হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভারতকে সারা বিশ্ব ১০০ কোটি মানুষের মার্কেট হিসাবে গণ্য করে। ফলে বস্তুবাচক চিন্তাধারার কাছে মনুষ্যত্ব দাম হারাচ্ছে। এ জন্য আন্তর্জাতিক মহল ভারতের বিরুদ্ধে কাশ্মীর ইস্যুতে কোনও আওয়াজ তোলে না। আমি আন্তর্জাতিক মহলের উপর হতাশ। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনের মাঝেই একথা বলেন ইমরান।
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তনের কাছে কোনও পথ খোলা নেই বলে জানান ইমরান। তিনি বলেন, আমাদের কাছে বিশ্ব দরবারে ইস্যু উত্থাপন ছাড়া আর কী উপায় আছে? ভারতকে আক্রমণ করব? অবশ্যই না। আমরা আমাদের ক্ষমতা অনুযায়ী সমস্ত বিকল্প রাস্তায় হেঁটে দেখছি। আমরা যুদ্ধ চাই না। যুদ্ধ ছাড়া কী করে বিষয়টি মেটানো যায় তা দেখছি।
জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর থেকেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই নিয়ে সরব হয়েছে পাকিস্তান। তবে চিন ছাড়া কোনও দেশকেই তারা পাশে পায়নি। অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিনবার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন বটে। তবে মোদীর সঙ্গে দেখা করে প্রত্যেকবার ফের ভারতের সুরে সুর মিলিয়েছেন। আগামী বছর অ্যামেরিকায় নির্বাচন। আর অনাবাসী ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেই ভারত ও পাকিস্তান দুই পক্ষকে তুষ্ট রেখে নিজের ভাবমূর্তি রক্ষা করতেই ট্রাম্পের বারবার এই ভোলবদল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের অধিবেশনে কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন করে ভারতকে চাপে ফেলতে চেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু সেখানেও কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের দাবি ও চিন্তাধারা সমর্থন পায়নি বিশ্বের। বরং সেই অধিবেশনে পাকিস্তানের কাশ্মীর নিয়ে অভিযোগের পাল্টা জবাব দেয় ভারত। পাকিস্তানকে তুলোধনা করে ভারত বলে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের উৎসস্থল থেকে মিথ্যা ও মনগড়া কাহিনি প্রচার করা হচ্ছে। অথচ পাকিস্তানেই বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকেই মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে ৷
এদিকে, এত কিছুর মাঝে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তায়ইপ এরডোগানের কথায় অনুপ্রেরণা খুঁজে পেয়েছেন বলে জানান ইমরান। কাশ্মীর থেকে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন এরডোগান। বলেন, কাশ্মীরিদের সুনিশ্চিত ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য ভারত ও পাকিস্তানকে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর ইস্যু মেটাতে হবে। তবে এই মন্তব্যের পরেও ইমরানের মিশন কাশ্মীর সফল হওয়া দূর অস্ত।
Be the first to comment