চলতি অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি ৩.৩ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্য নিয়েছিল কেন্দ্র ৷ কিন্তু, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (RBI) থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ চাইতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ একটি সংবাদসংস্থা সূত্রে এমনটাই খবর।
এক সরকারি আধিকারিক বলেন, প্রয়োজনে চলতি আর্থিক বছরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকার অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ চাইতে পারে (কেন্দ্র) সরকার। আগামী বছরের জানুয়ারিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান ওই আধিকারিক। যদিও এবিষয়ে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক বা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি ৷
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে দেশের অর্থনীতির গতি অনেকটা কমে গেছে। দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ অগাস্টে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সাংবাদিক বৈঠক করে দেশের অর্থনীতির খতিয়ান তুলে ধরেন। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। যদিও দেশের জিডিপি-এর অবস্থা খারাপ, তা মানতে রাজি হননি। তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির দেশগুলিতেও মন্দা চলছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের বৃদ্ধির হার ভালো। কিন্তু, কয়েকদিন পরেই সামনে আসা মন্দার ছবিটা ৷ চলতি আর্থিক বছরের শুরুতেই দেশের জিডিপি তথা আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে দাঁড়ায় ৫ শতাংশ ৷ যা গত ৬ বছরে সর্বনিম্ন ৷
এরপর সেপ্টেম্বর দেশীয় ও নতুন উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির জন্য কর্পোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী ৷ সেজন্য চলতি অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়ে বাড়তি ১৪৫ লাখ কোটি টাকার বোঝা চাপবেও বলে জানান অর্থমন্ত্রী ৷ ফলে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় তৈরি হয় ৷ চলতি বছরের অগাস্টেই সরকারকে ১.৭৬ লাখ কোটি টাকা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আরবিআই ৷ এর মধ্যে উদ্বৃত্ত বাবদ ১,২৩,৪১৪ কোটি এবং মূলধন খাত থেকে আরও ৫২,৬৩৭ কোটি টাকা সরকারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা ৷ অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, তারপরও সরকারের গলায় আর্থিক বোঝার ফাঁস ক্রমশ চেপে বসছিলো ৷ আর সেজন্যই অন্তবর্তীকালীন লভ্যাংশ চাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ৷
উল্লেখ্য, অতীতেও আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে আরবিআই-এর কাছ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ গত বছরে অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ বাবদ ২৮ হাজার কোটি টাকা দিয়েছিল আরবিআই ৷ ২০১৭-২০১৮ সালে অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ বাবদ ১০ হাজার কোটি টাকা পেয়েছিল কেন্দ্র ৷ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও অন্তর্বর্তীকালীন লভ্যাংশ বাবদ ২৮ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের হাতে তুলে দিয়েছিল আরবিআই ৷
Be the first to comment