জীর্ণ টালা ব্রিজ। রবিবার থেকে ওই ব্রিজ দিয়ে ভারী যানচলাচল বন্ধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ব্রিজ পরিদর্শন করেছে বিশেষজ্ঞরা। এই অবস্থায়, রেলকে ভগ্নপ্রায় টালা ব্রিজের একাংশ মেরামতির জন্য আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, রবিবার, রাজ্য পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়র দেবাশিস রায় ব্রিজটি প্রাথমিকভাবে ঘুরে করে দেখেছেন। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন, পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। দেবাশিস রায়ের কথায়, আমাদের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ বিষয়টি রেলকে জানানো হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর মেলেনি। আগামী বৃহস্পতিবার এই ব্রিজ পরীক্ষা করে দেখবেন বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যরা।
রাজ্য পূর্ত দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, এই ব্রিজের অবস্থা ভাল করে যাচাই করতে রাজ্যের কাছে আরও ভাল যন্ত্র রয়েছে। আমরা সেটাকে কাজে লাগাবো। মানুষের হয়রানি রুখতে আমরা প্রস্তুত। টালা ব্রিজের স্বাস্থ্য বেহাল। তাই তাকে ভেঙে ফেলাই ভালো। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য রাইটসকে দায়িত্ব দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সম্প্রতি তারা রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ব্রিজ পরিদর্শনে রাইটসের প্রতিনিধি ছাড়াও ছিলেন, গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স, রেল ও পূর্ত দফতরের প্রতিনিধিরা। পরে তারা রিপোর্ট জমা দিয়েছে নবান্নে।
টালা ব্রিজ নিয়ে শুক্রবার নবান্নে বৈঠক হয়। পরে, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, রাইটস ও পূর্ত দফতরের বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাব মেনেই টালা ব্রিজে ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। তবে শুধুমাত্র ছোটো গাড়ি চালানো হবে। মানুষ যাতায়াত করতে পারবেন। পুজো পর্যন্ত এমনটাই করা হবে। পুজোর পর আবার এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে পরিবহণ সচিব জানান, ওই ব্রিজে প্রায় ৬০০-এর বেশি বাস চলে। সেগুলি আর চলবে না। বিকল্প রুট তৈরি করা হচ্ছে। কিছু বাসকে ঘোরানো হবে। ওই এলাকার মানুষের কথা মাথায় রেখে ট্রেন ও মেট্রো রেলকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে, যাতে বেশি সংখ্যক ট্রেন চালানো হয়।
সম্প্রতি টালা ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দিয়েছে ভারতীয় রেলের অধীনস্থ পরামর্শদাতা সংস্থা রাইটস। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন মেরামত না করার ফলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে টালা ব্রিজ। ফলে যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে ব্রিজটি। উৎসবের মরশুমে তাই বড়সড় বিপদ এড়াতেই প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, রবিবার থেকেই টালা ব্রিজ দিয়ে ৩ টনের বেশি ওজনের গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। ফলে সকাল থেকে বাস সহ বড় পণ্যবাহী গাড়ি চলছে না হেমন্চ সেতু বা টালা ব্রিজ দিয়ে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে উত্তর কলকাতা ও উত্তর শহরতলির মানুষ ঘোর সমস্যায়। তবে, হয়রানি রুখতে বিকল্প রুটে বাস ও ভারী পণ্যবাহী যান চালাচল করছে।
Be the first to comment