ভারত সফরে আসার আগেই বন্ধু ‘পাকিস্তান’-এর কাঁধ থেকে হাত সরিয়ে নিল চিন। এতদিন কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে যারা বারবার মুখ খুলছিল, সেই বেজিং বৃহস্পতিবার স্পষ্ট জানালো, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় ৷ সন্দেহ নেই চিন সফররত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পক্ষে এমন মন্তব্য যথেষ্ট অস্বস্তিকর।
উল্লেখ্য, মাস দু’য়েক আগেই জম্মু-কাশ্মীর থেকেই ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা প্রত্যাহারের পরই সরব হয়েছিল ইসলামাবাদ ৷ দিল্লির দিকে বারবার অশান্তিতে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল তারা ৷ বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছিল। পাকিস্তানের সুরে সুর মিলিয়েছিল একমাত্র চিন ৷ এতদিন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো রাষ্ট্রপ্রধানরা যেখানে কাশ্মীরকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেই মন্তব্য করেছেন, সেখানে বেজিংয়ের এই অবস্থান নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়াচ্ছিল দিল্লির ৷ তার উপর ভারত-চিন সীমান্ত বিরোধের বিষয়টি তো ছিলই ৷
মাস দুয়েক ধরে বিষয়টি নিয়ে চাপানউতোর চললেও আচমকাই ভোল বদল বেজিংয়ের। শুক্রবার ভারত সফরে আসছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। জিনপিংয়ের সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ৷ নিঃসন্দেহে ভারতের বাজার চিনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত লোভনীয় ৷ কূটনৈতিক এবং বাণিজ্য মহলের বিশ্বাস, পাকিস্তানের মতো একপ্রকার ভেঙে পড়া অর্থনৈতিক দেশকে পাশে পেতে কোনওমতেই ভারতের বাজার হাতছাড়া করতে রাজি নয় চিন ৷ সেই মতোই প্রত্যাশিত ভারত সফরের আগে কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের কাঁধ থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে একপ্রকার দিল্লির পাশে থাকার বার্তা দিতে চাইল বেজিং প্রশাসন ৷
জিনপিংয়ের ভারত সফরের অন্যতম জরুরি ইস্যু হতে চলেছে ৫জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের বিষয়টি ৷ ভারতের বাজারে শীঘ্রই ৫জি নেটওয়ার্কের অনুপ্রবেশ হতে চলেছে। বাণিজ্য মহলের বিশ্বাস, কম দামি চিনা ফোন যেগুলি ৫জি নেটওয়ার্কে কাজ করতে সক্ষম, সেগুলি ভারতের বাজারে অতি অল্প দামে বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে চিনা সংস্থাগুলির ৷ এই সুযোগ কোনওভাবেই হাতছাড়া করতে রাজি নয় বেজিং।
এবারের সফরে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে এই সফর। ডোকলাম উত্তেজনার পর চিনা রাষ্ট্রপ্রধানের এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
Be the first to comment