১৯৮৩ সালে ১০ দিন জেলে ছিলেন ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই সময় তিনি জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ১৯৮৩ সালে ছাত্র বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন ৷ ছাত্র সংসদের সভাপতিকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে তাঁরা তৎকালীন উপাচার্যকে ঘেরাও করেছিলেন। ঘেরাও হটাতে ডাকা হয় পুলিশ। ছাত্র-ছাত্রীদের মেরে ঘেরাও সরানো হয়। গ্রেফতার করা হয় তাঁদের।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের “দেশদ্রোহী” বিতর্ক সারা দেশে আলোড়ন তুলেছিল ৷ সেই সময় অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি প্রবন্ধ একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় ৷ সেখানে তিনি ১০ দিন তিহার জেলে থাকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছিলেন ৷ তিনি বলেছিলেন , আমাদের মারধর করা হয় এবং তিহার জেলে আটকে রাখা হয়। আমাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ না উঠলেও পুলিশ খুনের চেষ্টা সহ আরও সব ধারা দিয়েছিল। ১০ দিন তিহার জেলে আটকে রাখার পর পুলিশ এই ধারাগুলো তুলে নেয়।
বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিক আরও বলেন, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি পদক্ষেপের পিছনে ছিল তৎকালীন কংগ্রেস শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের মদত। অভিজিৎবাবু বলেছেন, সেই সময় ছাত্র সংসদের সভাপতি জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। কর্তৃপক্ষ ভর্তি প্রক্রিয়ায় এমন নিয়ম নিয়ে আসে যাতে গ্রামীণ অঞ্চল থেকে আসা পড়ুয়ারা সমস্যার মুখে পড়েছিল। এই কারণে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই কারণে তাঁরা উপাচার্যের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।
২০১৬ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র সংসদের সভাপতি কানহাইয়া কুমার সহ বেশ কিছু ছাত্র নেতার গ্রেফতারের ঘটনায় অভিজিৎ এই প্রবন্ধে বলেন , এই ঘটনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা ৷ তারা আমাদের বলছে, আমরাই বস। তোমরা চুপ করে সংযত থাকো ৷
১৯৮৩ ও ২০১৬ সালের ঘটনার তুলনা টেনে প্রেসিডেন্সি কলেজ ও হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অভিজিৎ ব্যানার্জি বলেন, দুটো ঘটনাতে সরকারের আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন মতের ধারাকে ঐতিহ্যগতভাবে যে নিরাপদ স্থান দিয়ে আসছে তা বিপন্ন করে তুলেছে। ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন অভিজিৎ ব্যানার্জি ও তাঁর স্ত্রী এস্থার ডুফলো। বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য দূরীকরণে পরীক্ষা মূলক পন্থা নিয়ে কাজের জন্যই তাঁদের এই সম্মান দেওয়া হয়েছে। অভিজিৎ ব্যানার্জি ও এস্থার ডুফলোর সঙ্গে মাইকেল ক্রেমারও অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন।
Be the first to comment