৩টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে সেনাঃ বিপিন রাওয়াত

Spread the love

ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠলো ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ৷ আবারও পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটির উপর হামলা চালাল ভারতীয় সেনা ৷ গুঁড়িয়ে দিল তিনটি ঘাঁটি ৷ ভারতীয় সেনার হামলায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় দশজন পাকিস্তানি সেনাও ৷ রবিবার বাহিনীর এই হামলার কথা স্বীকার করে নেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এদিনের হামলায় নিকেশ হয়েছে কম করে ৩৫ থেকে ৪০ জন জঙ্গি ৷ যারা পাক মদতপুষ্ট জইশ-ই-মহম্মদের সদস্য।

এর আগে দুইবার সার্জিকাল স্ট্রাইকের পর আজ ফের একবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাল ভারতীয় সেনা ৷ নীলম, লেপা সহ পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের কম করে সাতটি জায়গায় হামলা চালায় ভারতীয় সেনা ৷ তবে, বালাকোট অভিযানের মতো ভারতীয় বায়ুসেনাকে এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়নি ৷ এমনকি, নিয়ন্ত্রণরেখা টপকেও ওপারে ঢোকেনি ভারতীয় সেনা ৷ গোলা বর্ষণ করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে এদিন ৷ জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাডগুলো ধ্বংস করতে রকেট এবং অত্যাধুনিক অস্ত্রের সাহায্য নেওয়া হয়েছে ৷ এদিনের সাফল্যের পর সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত বলেন, “ইসলামাবাদের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা বারবার ভারতের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করছে ৷ চেষ্টা চালাচ্ছে অনুপ্রবেশের ৷

শনিবার থেকে জঙ্গিদের একটি দল সীমান্ত টপকে এদেশে ঢোকার চেষ্টা করছিল ৷ এমনকি, সীমান্তের ওপার থেকেই এপাশে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল তারা ৷ যার যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনা ৷ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জঙ্গিঘাঁটিগুলি ৷”

সেনাপ্রধানের আরও দাবি, ওই ঘাঁটিগুলোতেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হত জঙ্গি হওয়ার ৷ তাঁর কথায়, “বেশ কিছুদিন ধরেই আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ বিষয়গুলির উপর নজর রাখছিল ৷ সেনাবাহিনীর কাছে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ আসার পরই আজ আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

রাওয়াত জানান, জঙ্গিরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিল ৷ কিন্তু, সেনাবাহিনীর দক্ষতায় ও ক্ষিপ্রতায় যা সফল হয়নি ৷ পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, শনিবার রাত থেকেই এই অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছিল ৷ পাকিস্তান সেনারা নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছিল ভারতীয় সেনা এবং নিয়ন্ত্রণরেখার এপারে বাসিন্দাদের উপর ৷ তাই প্রত্যাঘাত ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না বলেও স্পষ্ট করেছেন সেনাপ্রধান ৷

মাস দুয়েক আগে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ এবং ৩৫ A ধারা প্রত্যাহারের পর থেকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। ইসলামাবাদ বারবার দিল্লির এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে ৷ এমনকি, বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে দরবারও করেছিল ৷ কিন্তু, প্রতি ক্ষেত্রেই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাদের ৷ রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে এই ইশুতে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হলেও তেমনভাবে কোনও দেশকেই পাশে পাননি ইমরান খান ৷ উলটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে বিশ্ব মঞ্চে ৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পর কাশ্মীর ইস্যুতে চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংকেও কার্যত পাশে পেয়েছে নয়া দিল্লি ৷ কূটনৈতিক দিক থেকে ধাক্কা খাওয়ার পর আজ নিয়ন্ত্রণরেখার এপার থেকেও ধাক্কা খেতে হল ইসলামাবাদকে ৷ অনুপ্রবেশের চেষ্টা বানচাল করে, জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে নয়া দিল্লির স্পষ্ট বার্তা কোনওভাবেই সন্ত্রাসকে বরদাস্ত করা হবে না তা ফের একবার স্পষ্ট হয়ে গেল ৷

যদিও, দিনের শেষে ক্ষয়ক্ষতি ধামাচাপা দিতে এবং ধাক্কা সামলাতে চেষ্টার কসুর করছে না ইসলামাবাদ ৷ নিজেদের দোষ ঢেকে দিল্লির ঘাড়ে দোষ চাপাতে তলব করেছে পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনার গৌরব আলুয়ালিয়াকে ৷ সূত্রের খবর, তাঁর কাছ থেকে পুরো বিষয়টি জানার চেষ্টা করেছেন ইসলামাবাদের কূটনীতিকরা ৷ সন্দেহ নেই, আজকের এই হামলার পর ফের ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন মোড় নিল ৷

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*