টালা ব্রিজ সংস্কারের সময় সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে আগামী দু’বছরের জন্য তৈরি হল বিশেষ রোডম্যাপ। বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সোমবার কসবায় পরিবহন দফতরে বৈঠক করেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই তিনি রোডম্যাপ তৈরির কথা জানান ৷
এদিনের বৈঠকে ছিলেন সরকারি ও বেসরকারি বাস ইউনিয়ন, মিনিবাস ইউনিয়ন, অটো ইউনিয়ন এবং লাক্সারি ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের তরফে ওলা ও উবারের প্রতিনিধিরা। পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দুবাবু বলেন, আজ আমরা যে রোডম্যাপ তৈরি করলাম তাতে সবাই সম্মতি জানিয়েছেন। মিনিবাস ও অটো সংগঠনের প্রতিনিধিরা যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেগুলি দপ্তর বিবেচনা করে আগামী মঙ্গলবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাশাপাশি শুক্রবার লাক্সারি ট্যাক্সি যেমন ওলা ও উবার টালা সংলগ্ন রাস্তায় যাতায়াতের রোডম্যাপ জমা দেবে।
নর্থ কলকাতা মিনিবাস ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ নারায়ণ বসু বলেন, আজ বৈঠকে আমরা শুভেন্দুবাবুকে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছি ৷ এই মুহূর্তে চিৎপুর ব্রিজের ওপর দিয়ে অনেক কম সংখ্যায় গাড়ি চলাচল করছে। তাই সেখান দিয়ে যাতে আরও বেশি গাড়ি চলাচল করে, সেই দিকে নজর দেওয়ার কথা বলেছি। এছাড়া লক গেট ব্রিজ দিয়ে এতদিন পর্যন্ত ছোটো গাড়ি চলাচল করত। আমরা প্রস্তাব করেছি যাতে এই ব্রিজের উপর দিয়ে বাসগুলোকে একমুখী করে চালানো হয়। আর জি কর হাসপাতালের সামনে একটি সাবওয়ে তৈরির প্রস্তাব দিয়েছি। যাতে সাবওয়ে দিয়ে মানুষ রাস্তা পারাপার করতে পারেন। এর ফলে ব্রিজের উপরে যানবাহনের গতিও অনেকটা বাড়বে।
বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর টালা ব্রিজের উপর দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে বেসরকারি বাসের চালক ও মালিকদের কঠিন সংকটের মধ্যে পড়তে হয়েছে। তাই যাত্রীদের সুবিধার জন্য বিকল্প হিসেবে অন্যান্য রাস্তা দিয়ে বাস ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে জ্বালানি খরচও বেড়েছে ৷ পাশাপাশি ঘুরপথের জন্য দু’পক্ষের বাস মালিকদের লোকসানও হচ্ছে। তাই উভয় রুটের প্রতিনিধিদের নিয়ে খুব শীঘ্রই একটি বৈঠক করা প্রয়োজন। উভয় রুটের ক্ষতিগ্রস্ত বাস মালিকদের ভাড়া বৃদ্ধি না করা ছাড়া উপায় নেই। মন্ত্রী আমাদের এই প্রস্তাবটি শুনেছেন। আগামী মঙ্গলবার পরিবহন দফতরের বৈঠকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শুভেন্দুবাবু ৷
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অটো ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাও। অটো সংগঠনের সম্পাদক খোকন শীল বলেন, টালা ব্রিজের ওপর ভারী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অস্থায়ীভাবে সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত অটো চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। সেই দিন থেকেই ওই রুটে অটো চলাচল শুরু হয়। এই অস্থায়ী রুটে প্রথম দিকে আমরা ৬০টি গাড়ি চালাই। পরের দিকে আরও ৪০ টি গাড়ি দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে ওই রুটে মোট গাড়ির সংখ্যা ১০০ । শুভেন্দুবাবু আমাদের ওই রুটে আরও বেশি সংখ্যায় গাড়ি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ১০০টির জায়গায় ৩০০টি অটো চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
উল্লেখ্য, মহালয়ার আগে টালা ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞরা রিপোর্ট জমা দেন নবান্নে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে পুজোর ঠিক আগেই টালা ব্রিজের উপর দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় ভারী যানবাহন চলাচল।
Be the first to comment