কাশ্মীরের কুলগামে জঙ্গি হামলায় ৬ বাঙালি শ্রমিককে খুনের ঘটনায় ‘কড়া তদন্তে’র দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ঘটনায় সত্য উদঘাটন করা হোক, এমন দাবিই করেছেন মমতা। কুলগামে জঙ্গি হানায় নিহত বাঙালি ৫ শ্রমিকের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সল্টলেক সিটি সেন্টারে একটি অনুষ্ঠান থেকে বেরোনোর সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কাশ্মীরে এখন সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ। ওখানকার প্রশাসন এখন কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে। তাঁর কথায়, কে কোথাকার লোক সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা তাঁরা সবাই মানুষ।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে এই শ্রমিকদের। তাঁরা বাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তার মধ্যেই এই নৃশংস হামলা চালায় জঙ্গিরা। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর থেকেই জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখের প্রশাসন কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। এদিকে আজ থেকেই জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে পথ চলা শুরু করছে সরকারি ভাবে। কিন্তু এদিন মমতা সরাসরি না বললেও, বাংলার শ্রমিকদের উপরের হামলার ঘটনায় ঘুরিয়ে দায় চাপালেন কেন্দ্রের উপরেই। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এরাজ্যেও তো কত অন্য রাজ্যের মানুষ রয়েছেন। তাঁরা কিন্তু বাংলায় নিরাপদেই আছেন।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে নিশানা করে পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র বলেছেন, দেশজুড়ে বাঙালিদেরই টার্গেট করা হচ্ছে। পাল্টা মুখ খুলেছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়ও। কুলগামের ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও।
কুলগামের ঘটনায় টুইট করে মমতা লিখেছেন, কাশ্মীরের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। ৫ জন শ্রমিককে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। আমরা গভীরভাবে শোকাহত। কাশ্মীরে এখন কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। আইন-শৃঙ্খলার ভার কেন্দ্র সরকারের হাতে। সে কারণে আমরা এ ঘটনার তদন্তের দাবি জানাচ্ছি, যাতে সত্যটা সামনে আসে। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও। রাজ্যপাল বলেছেন, এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। বাঙালি শ্রমিকদের মৃত্যুতে শোকাহত।
অন্যদিকে, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, সারা দেশে যেভাবে বাঙালিদের টার্গেট করা হচ্ছে, তাতে মুখ্যমন্ত্রী ব্যথিত। কাউকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, কাউকে গুলি করে মারা হচ্ছে। খুব উদ্বেগের বিষয় এটা। কাশ্মীরে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের কেন সুরক্ষা দেওয়া হবে না? মুর্শিদাবাদে নিহত শ্রমিকদের বাড়িতে গিয়ে তৃণমূলের খলিলুর রহমান বলেন, এই ঘটনাতেই স্পষ্ট যে, কাশ্মীরে কোনও শান্তি নেই।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটন। এ ঘটনায় রাজনীতি করা ঠিক নয়। এটাও ঠিক যে, বাংলায় কর্মসংস্থান নেই, সে কারণেই অন্য রাজ্যে কাজের খোঁজে যাচ্ছেন শ্রমিকরা।
Be the first to comment