রসগোল্লা বাংলারই, সাফ জানিয়ে দিলো GI আদালত!

Spread the love

রসগোল্লা তুমি কার? এই প্রশ্নের উত্তর অনেক দিন আগেই দিয়েছে জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন (GI) ট্যাগ। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হয়নি প্রতিবেশী রাজ্য ওডিশা। পশ্চিমবঙ্গ এই বিশেষ শংসাপত্র পাওয়ার পরেই ওডিশার মিষ্টির দাবিদার হিসেবে প্রযোজনীয় সমস্ত কাগজপত্র জমা দেয় চেন্নাইয়ের জিআই রেজিস্ট্রি সংস্থার দফতরে। অবশেষে তার মধুরেণ সমাপয়েৎ ঘটলো।

চেন্নাইয়ের জিআই আদলতের তরফে বৃহস্পতিবার তাদের চূড়ান্ত রায়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, রসগোল্লা পশ্চিমবঙ্গের। ফলে ওড়িশার রসগোল্লা না কি বাংলার সেই বিতর্ক মিটলো এই চূড়ান্ত রায়ে। এর আগে এই বিতর্কে বাংলার পক্ষে রায় হলেও তা চ্যালেঞ্জ করায় এবার সেখানে চূড়ান্ত রায় গেল বাংলারই পক্ষে। উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসেই রসগোলার সৃষ্টি হয়েছে ওডিশায় এই মর্মে ওডিশাকেও GI ট্যাগ দিয়েছিল চেন্নাইয়ের জিআই রেজিস্ট্রি সংস্থা। জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন বা জিআই ট্যাগ মতে, রসগোল্লার দাবিদার হিসেবে উচ্চারিত হবে ওডিশার নামও। ।

বলা হয়, চেন্নাইয়ের জিআই রেজিস্ট্রি সংস্থার দেওয়া এই বিশেষ সংশাপত্র গ্রাহ্য হবে ২০২৮-এর ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই সংশাপত্রের জোরে মিষ্টিটি ওডিশার আঞ্চলিক মিষ্টি হিসেবে চিহ্নিত হয়। কিন্তু তাতে কী এত সহজে ছাড়া যায়। এরপর ফের জিআই আদালতের দ্বারস্থ হয় উভয় রাজ্য। আর তাতেই এবার জয় হল বাংলার। চাঁদ পানা, তুলতুলে, ভূবন ভরানো সাদের রসগোল্লা এল বাংলার ঘরে।

তবে নামে মিল থাকলেও দু’রাজ্যের রসগোল্লার আকৃতি ও চরিত্রে কিছু অমিলও আছে। দু’রাজ্যের বিশেষজ্ঞ ও মিষ্টি প্রেমিকরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছিলেন ময়দানে। তথ্যপ্রমাণ যোগাড়ে ভরসা যোগায় ইতিহাস। প্রাচীন পুঁথি থেকে পান্ডুলিপি ঘেঁটে তাঁরা দাবি করেন, রসগোল্লায় তাঁদেরই অধিকার। তবে দু’বছরের আইনি লড়াইয়ের পর জিওগ্র্যাফিক্যাল ইন্ডিকেশন জানিয়েছে ওডিশা নয়, রসগোল্লা বাংলার সম্পদ।

এই বাংলায় ১৮৬৪ সালে নবীনচন্দ্র দাস প্রথম রসগোল্লা তৈরি করতে শুরু করেন। ১৮৬৮ সালে বর্তমান রসগোল্লায় আত্মপ্রকাশ। আর ওড়িশায় রসগোল্লার জন্মের দাবি অপেক্ষাকৃত নতুন। তাই ওডিশার দাবি ধোপে টেকে না। জানিয়েছেন রসগোল্লা বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও তাঁদের বক্তব্য, অবিভক্ত বাংলা-বিহার-ওডিশায় রসগোল্লার প্রমাণ পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে আলাদা করে রসগোল্লা নিয়ে ওডিশার দাবি কখনই বাস্তবসম্মত নয়। কেউ কেউ তো দাবি করেছেন, রসগোল্লা নাকি প্রথম তৈরি হয়েছিল এই বাংলারই নদিয়ায়। রসযুদ্ধে দাবি, পাল্টা দাবির লড়াইয়ে শেষহাসি হাসল বাংলাই। বাঙালির পাতে স্বমহিমায় রসগোল্লাকে পেয়ে মিষ্টিমুখ রাজ্যবাসীর। বাংলা ঐতিহ্য ধরে রাখতে পেরে খুশি মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরাও।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*