পল মৈত্র, দক্ষিণ দিনাজপুর
আগামীকাল শনিবার ছট মাইয়া বা সূর্য দেবতার পুজা। কালীপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই আগামীকাল ছট পুজোয় মেতে উঠবে হিন্দী ভাষী মানুষজন সহ আপামর বাঙালীরা। তাই দক্ষিন দিনাজপুর জেলার মাহালী পাড়ায় চলছে শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ডালি ও কুলো। বাঙালীর প্রধান উত্সব দূর্গাপূজো ও কালীপুজোর মতো হিন্দী ভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের প্রধান উত্সব হল ছট পূজা। বর্তমানে এই ব্রত হিন্দী ভার্ষী সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ আর নেই। এখন আপাময় বাঙালী সহ মাড়োয়ারী, নেপালী সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষেরা নিজেদের পরিবারের মঙ্গল কামানায় এই পূজায় ব্রতী হন। ভাগবত পুরান, রামায়ন, মহাভারতের মতো বিভিন্ন গ্রন্থে সূর্যের উপাসনায় উল্লেখ পাওয়া যায়।
আর বিভভ মতে ছট হলো ষষ্ঠীর অপভ্রংশ। কার্তিক মাসের আমাবষ্যার পরে ষষ্ঠীতে ছট পুজোর ব্রত পালন করা হয়। আরেক মতে সুর্য আর ষষ্টি হল ভাই বোন। সেই কারনেই ছটকে ছট্টি মাইয়া বলা হয়। এই পুজো করা হয় বিকালের দিকে ঘাটে অস্ত যাওয়া সূর্য ও পরের দিন উদিয়মান সূর্যকে সাক্ষী রেখে। এই ছটপুজোর প্রধান উপকরনের মধ্যে অন্যতম হল প্রধান বাঁশের তৈরী উপাচার সাজানোর কুলো ও ডালা। আর সেই কারনে দক্ষিন দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার অন্তর্গত সর্বমঙ্গলা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাহালী পাড়ার শিল্পীদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। বড় থেকে ছোট মহিলা পূরুষ সকলে মিলে কুলো ও ডালা বানাতে ব্যস্ত।
সারাবছর বিভিন্ন ধররনের কাজ করলেও একটু বেশি উপার্জনের আশায় বছরের কয়েকটি দিন কুলো ও ডালা তৈরী করেন গ্রামের বেশিরভাগ পরিবারের লোকেরা। তাঁদের হাতের তৈরী সামগ্রী খোলা বাজারে কুলো ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও ডালা ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। কিছু ক্ষেত্রে পাইকারেরা নিয়ে যায়। এই কাজে ছাত্র ছাত্রী বা স্কুল কলেজের পড়ুয়ারাও বাবা মায়ের সাথে হাত মিলিয়ে উপার্জন করে। সারা বছর অন্যান্য কাজ করলেও ছট পূজার সময়ে একটু বেশি মুনাফা লাভের আশায় পরিবারের সকলে মিলে কুলো, ডালা বানান বলে জানান রুপা মাহালী, রাহুল মাহালীরা।
Be the first to comment