কোনও কোনও ক্ষেত্রে জোর করে ধর্মান্তকরণ আবার কোনও ক্ষেত্রে বিয়ের পর মেয়েরা নিজের ইচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিলেও তা মেনে নিচ্ছেনা পরিবার। লাভ-জিহাদ নিয়েই এখন দেশ জুড়ে চলছে চরম অব্যবস্থা। তারই মধ্যে শুক্রবার একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট। কোনও মহিলা যদি অন্য ধর্মের পুরুষকে বিয়ে করেন, তাহলে বিয়ের পর ওই মহিলাকে স্বামীর ধর্ম গ্রহণ করতেই হবে, এমন কোনও কথা আইনে বলা নেই। এটা একমাত্র ওই মহিলার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, তিনি বিয়ের পর কোন ধর্ম পালন করবেন। এক পার্সি মহিলার অন্য ধর্মের পুরুষকে বিয়ে করা নিয়ে আইনি জটিলতার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার এক ঐতিহাসিক রায়ে এমন কথাই জানাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র ও বিচারপতি এ কে সিক্রি, বিচারপতি এ এম খানউইকর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি অশোক ভূষণের সাংবিধানিক বেঞ্চ।
প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, কোনও পার্সি মহিলা যদি হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুরুষকে বিয়ে করেন, তাহলে তিনি আর পার্সি ধর্মাবলম্বী থাকবেন না। এমনকী, ওই মহিলার বাবারও যদি মৃত্যু হয়, তাহলে তিনি শেষকৃত্যে হাজির থাকতে পারবেন না। প্রসঙ্গত, গুলরোখ এম গুপ্ত নামের এক পার্সি মহিলা হিন্দু ধর্মের একটি ছেলেকে বিয়ে করার পরও বাবা-মার শেষকৃত্যে হাজির থাকার অধিকার চেয়েছিলেন। জোরোয়াস্ট্রিয়ান ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভিনধর্মে বিয়ে করে নিজের ধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়েছেন গুলরোখ। স্বামীর ধর্ম অনুযায়ী গুলরোখ আর তাঁর বাবা, মায়ের শেষকৃত্যে যোগ দিতে যেতে পারবেন না। ট্রাস্টের এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বোম্বে হাইকোর্টে আবেদন করেন গুলরোখ। কিন্তু বোম্বে হাইকোর্ট, ট্রাস্টের নিষেধাজ্ঞাই বহাল রাখে। এরপরই বোম্বে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা মামলা দায়ের করেন গুলরোখ।
কিন্তু শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানায়, আইনে কোথাও এমন বলা নেই যে একজন মহিলা অন্য ধর্মের পুরুষকে বিয়ে করলে তাঁর ধর্মীয় পরিচয় হারাবেন। অন্যদিকে,ভালসাদ পার্সি ট্রাস্টের আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যমকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, গুলরখ তাঁর বাবা-মার শেষকৃত্যে হাজির থাকতে পারবেন কি না, সেটা ১৪ ডিসেম্বর জানাতে হবে।
Be the first to comment