রফা সূত্র খুঁজতে ফড়নবীশ দূত পাঠিয়ে নয়া প্রস্তাব দিয়েছিলেন শিবসেনা প্রধানকে। কিন্তু, তাতেও দমার পাত্র নন উদ্ধব ঠাকরের দল। এখনও মুখ্যমন্ত্রীত্বের প্রশ্নে ৫০-৫০ ফর্মুলায় অনড় সেনা শিবির। শরিক বিজেপির উপর চাপ বাড়াতে দলীয় মুখপত্র ‘সামনায়’ মহারাষ্ট্রের স্বার্থে ‘বিকল্প’ জোটের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রয়োজনে কংগ্রেস, এনসিপি ও অন্যন্যদের নিয়ে সরকার গড়বে শিবসেনা।
দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত লিখেছেন, ‘বিজেপি বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হলে শিবসেনা সরকার গঠনের আবেদন জানাবে। সেনা কংগ্রেস, এনসিপি ও অন্যান্যদের সঙ্গে জোট হলে আসন ১৭০ হবে। এক্ষেত্রে শিবসেনা মুখ্যমন্ত্রীত্বের পদ পাবে ও সরকার পরিচালনা করবে।’ পরে তিনি জানান, তিনটি দলের আদর্শ পৃথক। কিন্তু ন্যূন্যতম কর্মসূচির ভিত্তিতে সরকার পরিচালনা করা হবে। উদাহরণ হিসাবে অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে এনডিএ জোটের কথা তুলে ধরা হয়।
মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনে সামনায় বেশ কয়েকটি বিকল্পের কথা বলেছেন শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। প্রথমত, বিজেপির হাতে রয়েছে ১০৫ বিধায়ক। সরকার গড়তে প্রয়োজন আরও ৪০ বিধায়কের সমর্থন। আস্থা ভোট তা প্রমাণে ব্যর্থ হলেই সরকারের পতন হবে। বিজেপির পক্ষে ম্যাজিক ফিগার জোগাড় করা অসম্ভব বলেই মনে করছেন শিবসেনার এই নেতা।
দ্বিতীয়ত, বিজেপিকে এনসিপি সমর্থন করলে সুপ্রিয়া সুলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হবেন। অজিত পাওয়ার রাজ্যের মন্ত্রীত্ব পাবেন। কিন্তু, আশা করা যায় পাওয়ার সাহেব ২০১৪ সালের ভুল আর করবেন না। বিজেপি বিরোধিতা করেই এনসিপির উত্থান হয়েছে। সেই বিজেপিকে সমর্থন করলে এনসিপির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।
তৃতীয়ত, বিজেপি শিবসেনা জোট তখনই সম্ভব যখন মুখ্যমন্ত্রীত্বের প্রশ্নে ৫০-৫০ ফর্মুলা মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু বিজেপির অনড় মনোভাবের কারণে তা হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। রাউত বলেন, সরকার গঠনের শেষ বিকল্প হিসাবে বিজেপি ইডিকে ব্যবহার করতে পারেন। তবে তাতেও ম্যাজিক ফিগার লাভ অসম্ভব। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে এক্ষেত্রে কাজে লাগালে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ধাক্কা খাবে বলেও মনে করেন তিনি।
সঞ্জয় রাউতের কথায়, ‘২০১৪ সালে বিজেপিকে সমর্থন করেছিল শিবসেনা। কিন্তু, জরুরী কোন আলোচনায় আমাদের ডাকা হত না। এইবার আর সেই ভুল করতে রাজি নই। দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে পরিষ্কার বলেছেন শিবসেনা ছাড়া যদি সরকার গড়তে পারে বিজেপি তাহলে তা করে দেখাক।’ গেরুয়া দলকে ছাড়া সরকার গড়তে আত্মবিশ্বাসী রাউতের দাবি, ‘শিবাজী পার্কে শপথ নেবেন শিবসেনার মুখ্যমন্ত্রী। ১৭৫ বিধায়কের সমর্থন নিয়ে সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করবে সেনা।’ কর্ণাটকে বিজেপি অপরেশন লোটালসের মাধ্যমে সরকার দখল করেছিল। এদিন অপরেশন লোটাসকে কটাক্ষ করা হয়। হরিয়ানায় সরকার গঠনে তৎপরতা দেখিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। শিবসেনা মুখপাত্র মনে করেন এর পিছনেই রয়েছে রহস্য।
এদিকে, সঞ্জয় রাউতের বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরব বিজেপি। সাংসদ রাওসাহেব দানভে বলেন, ‘মহারাষ্টের মানুষ বিজেপি ও শিবসেনা জোটকে ক্ষমতায় দেখতে চেয়েছিলেন। শিবসেনা যা মানুষকে অপমান করছেন।’ বিজেপি মন্ত্রী গিরিশ মহাজনের কথায়, রাউত যা বলছেন বলতে দেওয়া উচিত। আমরা অপেক্ষা করছি ও সব দিকে নজর রেখেছি।’
Be the first to comment