গঙ্গাসাগরের তীর্থযাত্রীদের জন্য কলকাতায় আউটরাম ঘাটের স্বাস্থ্য শিবিরে এবার বেডের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের এই শিবির এবার আগের তুলনায় বড় মাপের করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গঙ্গাসাগরে মেলার স্থানে অসুস্থ কাউকে হেলিকপ্টারে করে কলকাতার কোনও হাসপাতালে নিয়ে আসার বিষয়টিতেও এবার আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে শনিবার স্বাস্থ্য ভবনে একটি বৈঠক হয়। জানা গিয়েছে, তীর্থযাত্রীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে। শুধুমাত্র তাই নয়, পরিষেবার উন্নতির লক্ষ্যে, গত বছরের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এ বছর কোন কোন ক্ষেত্রে আর কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে, সে সব বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। গঙ্গাসাগরের তীর্থযাত্রীদের জন্য শিয়ালদহ এবং হাওড়া স্টেশনের পাশাপাশি আউটরাম ঘাটেও স্বাস্থ্য শিবিরের ব্যবস্থা করে স্বাস্থ্য দফতর। এই ঘাট থেকেই এ বছর গঙ্গাসাগর মেলার উদ্দেশে আরও বেশি সংখ্যক বাস ছাড়া হবে। যার জেরে, এই স্থানে এই বছর আরও বেশি সংখ্যক তীর্থযাত্রীর সমাগম হবে।
এই বেশি সংখ্যক তীর্থযাত্রীর চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে যাতে কোনও খামতি থেকে না যায়, তার জন্য প্রচেষ্টা জারি রেখেছে স্বাস্থ্য দফতর। এই চেষ্টার অঙ্গ হিসেবে, এই বছর ঘাটের স্বাস্থ্য শিবির আগের তুলনায় আরও বড় মাপের করার বিষয়ে শনিবারের ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এই শিবিরে আউটডোরের ধাঁচে চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা থাকে। এবার সেখানে বেডের ব্যবস্থা রাখার বিষয়েও ভাবা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, আউটরাম ঘাটে এ বারের স্বাস্থ্য শিবির বড় মাপের করা হবে। এই শিবিরে বেড রাখা হবে অর্থাৎ প্রয়োজনে কোনও তীর্থযাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে। তবে, তার আগে, এই বেডে রেখেও তাঁর চিকিৎসা চলবে। এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়কুমার চক্রবর্তীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আউটরাম ঘাটে স্বাস্থ্য শিবির যদি বড় করে করা হয়, তাহলে বেডের ব্যবস্থা রাখা হতে পারে। এটা যদি হয়, তাহলে সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
তবে আগের তুলনায় এ বছর আউটরাম ঘাটে বড় মাপের এই স্বাস্থ্য শিবিরের জন্য অতিরিক্ত লোকবলের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে শনিবারের বৈঠকে। তবে, কত সংখ্যক বেডের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে এই শিবিরে, সেই বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। এদিকে, গঙ্গাসাগরে মেলার স্থানে অন্য বছরের মতো এই বছরেও চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা থাকছে। প্রতিবছর যেমন এই পরিষেবায় উন্নতি আনা হয়, এ বছরও তার চেষ্টা চলছে। গঙ্গাসাগরের মেলা এবার দুই দিন এগিয়ে আনা হয়েছে। এর জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের ওই আধিকারিক বলেন, অন্য বছরের মতো এবারও গঙ্গাসাগরের মেলা স্থানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের পরিষেবার ব্যবস্থা থাকছে। গঙ্গাসাগর মেলায় যদি কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে তাঁকে হেলিকপ্টারে করে কলকাতার কোনও হাসপাতালে নিয়ে আসা হবে।
এই আধিকারিক আরও বলেন, গঙ্গাসাগর মেলায় হেলিকপ্টার অর্থাৎ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা আগেও হয়েছে। তবে, খুব ইমারজেন্সি ক্ষেত্রে তা ব্যবহৃত হয়েছে। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়টিকে এবার বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অত বেশি ব্যবহার হত না। এবার সেরকম প্রয়োজন হলে ব্যবহার করা হবে, সেরকম ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হলে, পরিস্থিতি যাতে সামাল দেওয়া সম্ভব হয়, তার জন্যেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
Be the first to comment