নার্সিংয়ের ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে উদ্ধার হয়েছে নার্সিংয়ের পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ছাত্রী সমাপ্তি নার্সিংয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। শনিবার সকালে মেন ক্যাম্পাসের সার্জারি বিল্ডিংয়ের পাশে নার্সিং হস্টেলের পাঁচতলার ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই পড়ুয়াকে প্রথম দেখতে পান তাঁরই এক সহপাঠিনী। এরপর খবর দেওয়া পুলিশে। ঘটনাস্থলে এসে দেহ উদ্ধার করে বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ছোট থেকেই বাংলা সাহিত্যের প্রতি টান ছিল ওই ছাত্রীর। বাংলা নিয়েই পড়তে চেয়েছিলেন তিনি। তবে নার্সিংয়ে সুযোগ পাওয়ার পর জেলা থেকে কলকাতার কলেজে পড়তে আসেন ওই ছাত্রী। অভাবের সংসারে পরিবারের সকলেই ভেবেছিলেন পড়া শেষ হলে অন্তত একটা চাকরি পাবে মেয়ে। পড়াশোনাতেও ভালোই ছিলেন এই পড়ুয়া। এখানে নার্সিংয়ের পড়াশোনা হয় ইংরেজি মাধ্যমে। অভিযোগ, কোনও ছাত্রী একটু কম ইংরেজি জানলে বা বুঝলে প্রকাশ্যেই সেইসব পড়ুয়াকে যাচ্ছেতাই ভাবে প্রতিদিন অপমান করেন শিক্ষিকাদের একাংশ।
পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, ওই ছাত্রীর ক্ষেত্রেও পড়াশোনার পথে মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই ইংরেজি। তাদের অভিযোগ, নার্সিংয়ের শিক্ষিকারা ছাত্রীদের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন। এসব নানা কারণেই হীনমন্যতায় ভুগছিলেন ওই ছাত্রী। পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্গাপুজোর সময় বাড়ি গিয়ে ওই ছাত্রী সাফ জানিয়েছিলেন এভাবে পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন না। তারপর খানিকটা বাড়ির লোকের জেদাজেদিতেই ফের কলেজে ক্লাস করতে আসেন তিনি।
ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার চাপ এবং প্রতিনিয়ত শিক্ষিকাদের দুর্ব্যবহারেই ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ নার্সিংয়ের পড়ুয়াদের। হস্টেলের অনেকেই নাকি বাধ্য হয়ে মাঝপথেই পড়া ছেড়ে কলেজ থেকে চলে গিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন ছাত্রীদের একাংশ। সারাক্ষণ পড়ুয়াদের তটস্থ হয়ে থাকতে হয় বলেও দাবি করেছেন পড়ুয়ারা।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ।
Be the first to comment