শরদের ‘পাওয়ার-প্লের’ সামনে মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন দেবেন্দ্র ফডণবীশ। এই ইস্তফার সঙ্গেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে উদ্ধব ঠাকরের শপথগ্রহণ এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার শপথ নেওয়ার কথা শিবসেনা প্রধানের। আর এই অনুষ্ঠানেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। মমতা ছাড়াও এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানী, হিন্দু মহাসভার প্রধান মোহন ভাগবতও।
এই আমন্ত্রণ ঘিরেই শুরু হয়েছে জল্পনা। ইতিমধ্যেই বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে বারংবার বৃহত্তর বিরোধী ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহারাষ্ট্রেও বিজেপির ‘ক্ষণস্থায়ী’ সরকারের পতনকে বিরোধীদের ঐক্যের ‘জয়’ হিসাবেই দেখতে চাইছে রাজনৈতিক মহল। আর সেই বিরোধী জোটে আঞ্চলিক শক্তিগুলোকেও এক ছাতার তলায় সামিল করতে চাইছেন উদ্ধব।
গত ২১ অক্টোবর ফল ঘোষণায় বিজেপির সঙ্গে শিবসেনার জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সরকার গড়ার ক্ষেত্রে বেঁকে বসে শিবসেনা। আড়াই বছরের মুখ্যমন্ত্রীত্বের দাবি করেন তিনি। কিন্তু, এই নিয়ে নারাজ বিজেপি শিবসেনার সঙ্গে জোট ভেঙে দেয়। বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে যাওয়ার পরেই কাছাকাছি আসতে শুরু করে শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি। এর মধ্যেই মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে দেন রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি শাসনের মধ্যেই উদ্ধব ঠাকরেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সামনে রেখে সরকার গড়ার পরিকল্পনা এক প্রকার নিশ্চিত করে ফেলে কংগ্রেস-বিজেপি-এনসিপি। কিন্তু, এর মাঝেই মারাঠা রাজনীতিতে আসে নাটকীয় মোড়।
গত শনিবার সাত সকালে চুপিসারে রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফডণবীশ। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার। সরকার গঠনের বিষয়টি সামনে আসতেই এই সরকার ‘অবৈধ’ বলে সুপ্রিম কোর্টে একযোগে মামলা দায়ের করে কংগ্রেস-শিবসেনা-এনসিপি। এই মামলার রায়ে বুধবার ফডণবীশকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে বলে ভারতের শীর্ষ আদালত। এর সঙ্গেই ওইদিন আস্থা ভোট হওয়ার কথাও জানায়।
কিন্তু, মঙ্গলবারই উপমুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন অজিত পাওয়ার। অজিত সরে যেতেই সরকার ধরে রাখার শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে ফেলেন দেবেন্দ্র। ওইদিন বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি কাঁটা সরতেই মহারাষ্ট্রের মসনদে উদ্ধবের আসীন হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ আদতে বিরোধীশক্তি বৃদ্ধির কৌশল হিসাবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল।
Be the first to comment