রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ, কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন দিলীপ-মুকুলরা

Spread the love

লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিরাট সাফল্য পেয়ে একুশে বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল বিজেপি৷ কিন্তু উপনির্বাচনের ফল তাদের বিশাল ধাক্কা দিয়েছে৷ বিশেষত, খড়গপুর ও কালিগঞ্জ- এই দুই আসনে পরাজয়ই বিজেপিকে আরও বিস্মিত করে তুলেছে। এই ভরাডুবির চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে চান দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ তাই পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে ৭ ডিসেম্বর কলকাতায় আসছেন তিনি।

গত ২৫ নভেম্বর ভোটগ্রহণ হয় উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ, নদিয়ার করিমপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর সদরে। ২৮ নভেম্বর ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায়, তিনটিতেই ভরাডুবি হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। অথচ, মে-এপ্রিলের লোকসভা ভোটে কালিয়াগঞ্জ এবং খড়গপুর সদরে অনেকটাই এগিয়ে ছিল বিজেপি। উপনির্বাচনের ইস্যু ভিন্ন হলেও গেরুয়া শিবিরের ভোট ব্যাংকে ফাটল কী কারণে এতটা চওড়া হল, তা নিয়েই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ইতিমধ্যেই হারের কী কী কারণ হতে পারে তা জানতে চেয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন অমিত শাহ। তারপরই রাজ্য নেতৃত্বও জেলা নেতৃত্বের কাছে বুথভিত্তিক সেই রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়৷ শনিবার সেই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বৈঠকে বসেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, রাহুল সিনহারা৷

প্রাথমিকভাবে দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, এনআরসি চেয়ে বিজেপির প্রচারকে ভালো ভাবে নেননি ভোটাররা। যার প্রতিক্রিয়া ধরা পড়েছে ভোটের বাক্সে। একই সঙ্গে বিজেপির পক্ষে দাবি করা হয়েছে, উপনির্বাচনে কারচুপি করেছে রাজ্য প্রশাসন। উপনির্বাচন যেহেতু রাজ্য প্রশাসন পরিচালনা করে থাকে, তাই তৃণমূলকে জেতাতে যে কোনো ধরনের কারচুপি করা হতে পারে অভিযোগ করেছেন রাহুল সিনহা। কিন্ত ভোটের ফলাফল ঘোষণার দিন তাঁর মুখেই শোনা যায়, এনআরসি নিয়ে সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে তৃণমূল।

তবে সূত্রের খবর, ভরাডুবির কারণ হিসেবে এনআরসি একটা কারণ হলেও, প্রার্থী চয়নের ক্ষেত্রেও বড়সড় গলদ হয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছেড়ে যাওয়া খড়গপুর সদর আসনে শোচনীয় পরাজয়কে বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় নেতারা। কারণ লোকসভা নির্বাচনে এই আসনেই ৪৫ হাজার ভোটের ব্যবধান পেয়েছিল বিজেপি, সেখানেই ২০ হাজার ভোটে গেরুয়া প্রার্থীর হার হয় কিভাবে? সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর রায়গঞ্জ লোকসভার অধীন কালিয়াগঞ্জে ৫৬ হাজার ভোটে এগিয়ে থেকেও হারতে হয়েছে দু’ হাজার ভোটে। এমনই সব প্রশ্ন নাড়া দিচ্ছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে।

তিন উপনির্বাচনের হারের প্রভাব যাতে আগামী বছরের ১০৭টি পৌরসভার নির্বাচনে না পড়ে সেদিকে নজর রাখছে বিজেপি। তাই এই সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলবেন অমিত শাহ। তাঁর কঠিন প্রশ্নের মুখে যে বঙ্গ নেতাদের পড়তে হবে, সে বিষয়ে একমত রাজনৈতিক মহল।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*