প্রথমবার জেতার জন্য ৯ ডিসেম্বর খড়গপুরবাসীকে ধন্যবাদ জানাতে যাবেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে সভা করার পরিকল্পনাও করেছেন তিনি৷ সোমবার বিধানসভায় একথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ওই সভায় খড়্গপুর কেন্দ্রে জয়ের অন্যতম কারিগর তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও থাকবেন। ইতিমধ্যেই খড়্গপুরে গিয়ে বিজয় সমাবেশ করে এলাকার মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে এসেছেন।
তৃণমূলের প্রতিষ্ঠার পর থেকে কালিয়াগঞ্জ ও খড়্গপুর থেকে গিয়েছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে।মাত্র ৫ মাস আগে লোকসভা ভোটের নিরীখে খড়্গপুর এবং কালিয়াগঞ্জ— দুই কেন্দ্রেই বিরাট ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বিজেপি। খড়্গপুরে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ এগিয়ে ছিলেন ৪৫ হাজার ১৩২ ভোটে।প্রায় ৪৮ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকা খড়্গপুর সদরে তৃণমূলের লড়াই সহজ ছিল না। তার উপরে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছেড়ে আসা এই বিধানসভা কেন্দ্র তাঁরই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ওই কেন্দ্রে কার্যত প্রেস্টিজ ফাইটে নেমেছিল তৃণমূল। সেখানে এসেছে সাফল্য।
রেজাল্ট বেরোনোর দিনই সে কথা মনে করিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন,‘‘তৃণমূলের ২১ বছর হল। কালিয়াগঞ্জ ও খড়্গপুর কোনওদিন পাইনি। এটাও আমরা পেয়েছি। জাতি, ধর্ম জোট বেঁধে হারিয়ে দিয়েছে বিজেপিকে। মানুষের রায়ই বড় রায়, তার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না। ’’
খড়গপুরে অবাঙালি ভোট একটা বড় ফ্যাক্টর ছিল৷ সেই ভোটও তৃণমূলের পকেটে এসেছে বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ লোকসভায় নিরিখে বিজেপির দখলে থাকা খড়গপুর ও কালিয়াগঞ্জ জিতে মমতা বলেছিলেন, এনআরসি নিশ্চিতভাবে কাজ করেছে। তবে একটা একটা জায়গায় একেক রকম ইস্যু রয়েছে। লোকসভায় কালিয়াগঞ্জে রাজবংশীরা ভোট দেয়নি। তখন প্রাইভেট অপারেটরদের দিয়ে ইভিএমের কাজ করানো হয়েছিল। করিমপুরে অর্ধেক উদ্ধাস্তু হিন্দু ও মুসলিম। খড়্গপুরের মানুষও বুঝতে পেরেছে। সবাই আমাদের ভোট দিয়েছে। এটাও একটা কম্বিনেশন। রাজবংশী, আদিবাসী, মুসলিম, হিন্দু-সবাই মনে করে সর্বধর্ম সমণ্বয় করতে পারবে একমাত্র তৃণমূল। অবাঙালিরাও বাংলায় ভালো আছেন। তাঁরাও শিক্ষা, স্বাস্থ্যের সুবিধা পাচ্ছেন। সবার ভোট পেয়েছি। এটা সবচেয়ে বড় জয়। উপনির্বাচন হলেও গুরুত্বপূর্ণ।”
অন্য দুটি আসন তো বটেই, বিজেপির রাজ্য সভাপতির গড় দখল করে তৃণমূল জয়ের আলাদা স্বাদ পেয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ তাই মর্যাদার লড়াইয়ে জয়ী হওয়ার কৃতিত্ব শহরবাসীকেই দিতে চান তৃণমূল সুপ্রিমো। বাকি দুই কেন্দ্রেও যাতে নেত্রী গিয়ে বিজয় সমাবেশ করেন, দলের মধ্যে সেই দাবিও উঠেছে। মমতা অবশ্য বলেছেন, সব জায়গাতেই তিনি যাবেন সময় ও সুযোগ বুঝে। এ মাসের মাঝামাঝি সময় প্রশাসনিক কাজে তাঁর নদিয়া সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। তখন করিমপুরে তিনি একবার যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
Be the first to comment