গভীর রাতে যখন দাউ দাউ করে জ্বলছিল ৪৬৫ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি নবনির্মিত বিধানসভা ভবন, তখনই দমকল কর্মীরা আশঙ্কা করেছিলেন বিরাট ক্ষতি হতে পারে।বৃহস্পতিবার পোড়া বিধানসভা ভবন দেখে সবাই চমকে গেলেন। নতুন ভবনটির ৪-৫ তলার কোনও কিছুই অবশিষ্ট নেই। মাত্র ৫ দিন পরেই এই ভবন ঝাড়খণ্ড সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
যেভাবে দুটি তলা পুড়েছে তাতে ক্ষতির পরিমান সঠিক এখনই বলা সম্ভব নয়। এমনই জানানো হয়েছে মুখ্য সচিব মহেন্দ্র শর্মার অফিস থেকে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এখানেই উঠছে প্রশ্ন, নতুন বিধানসভা ভবনটি ৫ দিন পরেই যদি সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও কেন দুর্ঘটনা রোধের ব্য়বস্থার কমতি ছিল। এক্ষেত্রে নির্মাণ সংস্থার দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠছে।
আরও অভিযোগ, ঝাড়খণ্ডের এই নতুন বিধানসভা তৈরিতে বিরাট পরিমাণ সরকারি অর্থের নয়ছয় হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের মাঝেই এমন দুর্ঘটনায় সরকারে থাকা বিজেপি অস্বস্তিতে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে ৫ দফার নির্বাচন শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ৭ ডিসেম্বর ভোট গ্রহন হবে। ফলে, নতুন বিধানসভা ভবনের অগ্নিকাণ্ড ঘিরে রাজনৈতিক মহল সরগরম। এদিকে নির্মাণ সংস্থার ঠিকাদার রাজু জানিয়েছেন, কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থাপনা ছিল না তেমন। যে কেউ নতুন বিধানসভা ভবনের ভিতর ঢুকত। কে কখন ঢুকছে বের হচ্ছে তা কেউ খেয়াল করতেন না।
ঠিকাদারের পাল্টা অভিযোগে রাজনৈতিক মহল সরগরম। প্রশ্ন উঠছে এই অগ্নিকাণ্ড নেহাত দুর্ঘটনা নাকি অন্তর্ঘাত। তবে এই বিষয়ে সরকারের তরফে এখনও কিছু স্পষ্ট করা হয়নি। শর্ট সার্কিটের তত্ত্ব উঠে আসছে অনবরত। বুধবার রাতে নতুন বিধানসভা ভবন থেকে গলগল করে আগুন বের হতে দেখা যায়। অগ্নিকাণ্ড এতটাই যে অনেক দূর থেকে আগুনের শিখা দেখতে পেয়েছেন অনেকে।
এদিকে আগুন নেভাতে রাতেই কোমর কষে নেমে পড়ে দমকল বিভাগের কর্মীরা। ১২টি ইঞ্জিন নামানো হয়। গভীর রাতে আরও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার চারিদিক বিরাট পুলিশ মোতায়েন করা হয়।তখনও ভিতরে ঢুকতে পারেনি দমকল কর্মীরা। জানা গিয়েছে মাঝরাত পেরিয়ে আগুন আয়ত্বে আনতে পারে দমকল। ততক্ষণে পুরো নতুন বিধানসভা ভবনের একটি অংশ পুড়ে দিয়েছে।
পরে বৃহস্পতিবার সকালে ভিতরের অবস্থা খতিয়ে দেখে পুলিশ ও দমকল বিভাগ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে মুখ্য সচিব ও রাঁচির পুলিশ সুপার আগুন নেভানোর প্রক্রিয়া তদারকি করেন।
Be the first to comment