আবারও নতুন করে অশান্তি, আগুন লাগানো হলো আক্রা সহ একাধিক স্টেশনে

Spread the love

নাগরিক সংশোধনী আইন (সিএএ) বিরোধী আন্দোলন ঘিরে নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠলো দক্ষিণ ২৪ পরগণার আক্রা এবং মুর্শিদাবাদের মণিগ্রাম এবং ফরাক্কা রেল স্টেশনে। স্টেশন চত্বরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বীরভূমের নলহাটি স্টেশনেও। দক্ষিণ ২৪ পরগণার বজবজ শাখার আক্রা স্টেশনে আন্দোলনের নামে তাণ্ডব চালাল বিক্ষোভকারীরা। তবে রেল সূত্রে খবর, বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রায় পাঁচশো বিক্ষোভকারী জমায়েত করেন আক্রা স্টেশন সংলগ্ন লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে।

প্রথমে অবরোধ শান্তিপূর্ণ থাকলেও, কিছুক্ষণের মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কেউ কেউ রেল লাইনে টায়ার জ্বালিয়ে দেন বলে অভিযোগ। যা থেকে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষজনের। স্থানীয় মানুষজন জানাচ্ছেন, ওই সময়েই শিয়ালদহ থেকে বজবজগামী একটি ট্রেন লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে এসে অবরোধে দাঁড়িয়ে পড়ে। সেই সময় বিক্ষোভকারীরা ট্রেনের চালককে নেমে আসার নির্দেশ দেয় বলে অভিযোগ প্রত্যক্ষদর্শীদের।

ট্রেনের চালক নামতে রাজি না হলে তাঁকে জোর করে নামানো হয় বলে অভিযোগ। এরপরই শুরু হয়ে যায় ট্রেনে ব্যাপক ভাঙচুর, এমনটাই চাঞ্চল্যকর দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। চালকের কেবিন, যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করার পর প্রতিটি কামরায় বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। রেলের দাবি, ট্রেনের সিট থেকে শুরু করে সমস্ত জিনিস কামরা থেকে উপড়ে লাইনে ফেলে দেওয়া হয়।

ওই সময় উপস্থিত রেল কর্মীদের একজন বলেন, ট্রেনে ভাঙচুরের পরেই বিক্ষোভকারীদের একটি বিশাল দল সোজা স্টেশন চত্বরে উঠে আসে। প্ল্যাটফর্মে থাকা অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন উপড়ে ফেলে দেওয়া হয় ট্রেন লাইনে। বিক্ষোভকারীরা ঢুকে যান স্টেশন মাস্টারের অফিসে। সেখান থেকে আসবাব পত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিসপত্র বের করে লাইনে ফেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

আই বি চৌধুরি নামে আক্রা স্টেশনের এক কমার্শিয়াল ক্লার্ক বলেন, আমরা ওই অবস্থা দেখে বুকিং কাউন্টারের কোলাপসিবল গেট বন্ধ করে দিই। কিন্তু তাতেও আটকানো যায়নি বিক্ষোভকারীদের। তাঁরা কংক্রিটের বিদ্যুতের খুঁটি দিয়ে দরজা ভেঙে ঢুকে পড়েন। ভেতরে আসবাবপত্র, কম্পিউটার সব ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেন। আমরা প্রাণভয়ে শৌচাগারে আশ্রয় নিই।

অন্যদিকে রাস্তায় চলা বিক্ষোভের জেরে দমকলও আটকে পড়ে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় স্টেশনে থাকা নথি থেকে যন্ত্রপাতি। বিকেলের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বড় পুলিশ বাহিনী।তাণ্ডবের একই ছবি সামনে আসে মুর্শিদাবাদের মণিগ্রামে। ট্রেন ভাংচুরের পাশাপাশি আরপিএফের গুমটিতেও আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি মালদহের ভালুক স্টেশনেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও মালদহের বৈষ্ণবনগর স্টেশনে আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে হটিয়ে দেয় পুলিশ।

বীরভূমের নলহাটিতেও ধরা পড়ে একই ছবি। সেখানেও স্টেশন চত্বরে আগুন লাগিয়ে তাণ্ডব চালায় আন্দোলনকারীরা। শুধু নলহাটি নয় বীরভূমের লোহাপুর স্টেশন চত্বরেও আগুন লাগায় বিক্ষোভকারীরা। ভস্মীভূত করে দেওয়া হয় স্টেশন। সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন পরিসেবা। অন্যদিকে এই তাণ্ডব রুখতে লাঠি হাতে স্টেশন হাঁটতে দেখা যায় কংগ্রেসের বিধায়ক মইনুল হককে। কার্যত গোটা রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের নামে নোঙরা তাণ্ডব চালাচ্ছেন একদল মানুষ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*