সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আন্দোলনের জেরে রবিবার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ে দিল্লি পুলিশ বাহিনী। দক্ষিণ দিল্লিতে নয়া আইন নিয়ে বিক্ষোভে হিংসার পর পুলিশ এই পদক্ষেপ করে। পুলিশ বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ও লাঠি চার্জ করে। তার আগে সরাই জুলেইনা ও মথুরা রোডে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। পুলিশের বক্তব্য চারটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। আগুন নেভাতে চারটি দমকলের ইঞ্জিন কাজে লাগানো হয়েছে বলে দাবি তাদের।
দিল্লির দমকল বাহিনী জানিয়েছে, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা একটি দমকলের গাড়ির পথ আটকায় ও সেটির ক্ষতি করে। হিংসার জেরে দুজন দমকলকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তারা। দিল্লি ট্রাফিক পুলিশ একটি টুইটে জানিয়েছে আন্দোলনের জেরে ওখলা আন্ডারপাস থেকে সরিতা বিহার পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় তারা।
এদিকে দক্ষিণ দিল্লির বিক্ষোভে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার ছাত্ররা যুক্ত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আমরা বারবার আন্দোলন শান্তিপূর্ণ রাখার কথা বলেছি। হিংসার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের আমরা নিন্দা করছি। তাদের দাবি, সঠিক আন্দোলনকে বদনাম করবার জন্য কিছু লোক এই হিংসা ঘটিয়েছে।
জামিয়া মিলিয়ার ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে এনএসইউআই এবং জেএনইউটিএ। পুলিশ বর্বরতার সীমা অতিক্রম করেছে বলে মন্তব্য করেছে জেএনইউ শিক্ষকদের সংগঠন। এদিকে জামিয়া মিলিয়ার পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ালেন JNU-এর ছাত্রছাত্রীরা ৷ জামিয়ায় পুলিশি আচরণের বিরুদ্ধে এবার দিল্লি পুলিশের সদর দফতর ঘেরাও করলেন JNU-এর পড়ুয়ারা ৷ শীতের দিল্লিতে রাতেই চলল ঘেরাও কর্মসূচী ৷ নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রতিবাদে মুখর দিল্লির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ৷ জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল থেকেই জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ ৷ সেই বিক্ষোভে পুলিশে লাঠি চার্জ ও পরে টিয়ারগ্যাস ফাটানোর ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৷ তারই প্রতিবাদে এবার সামিল হলেন জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ৷ প্রতিবাদে দিল্লি পুলিশের সদরদফর ঘেরাও কর্মসূচী চললো ৷
তবে শুধুমাত্র পুলিশের লাঠিচার্জ নয়, বেশ কিছু পড়ুয়াকে হস্টেল থেকে বের করে আনার সময় হাত তুলে আসতে হয় ৷ এটা তাদের জন্য খুবই অসম্মানের, বলছেন তারা ৷ এভাবে ক্যাম্পাসে তাদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ এছাড়া জামিয়া মিলিয়ার ঘটনায় প্রায় ৪০ পড়ুয়া আহত হয়েছেন ৷ তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন ৷ এসবের প্রতিবাদ করেই দিল্লি পুলিশের সদর দফতর ঘেরাও করে JNU ছাত্র সংসদ ৷
তবে প্রগতি ময়দান, দিল্লি গেট, আইটিও এবং আইআইটি মেট্রো স্টেশনের ঢোকা ও বেরোনোর গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে দিল্লি মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে উত্তেজনা ছড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়েও। পুলিশ ওই এলাকাতেও লাঠি চার্জ করেছে এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে।
Be the first to comment