শীতের পারদ নামতেই নলেন গুড়ে মজে আপামর বাঙালি

Spread the love

পল মৈত্র, দক্ষিণ দিনাজপুর

বাঙালি বড্ড বেশি ভোজনরসিক। জামাই ষষ্ঠীর পর আষাঢ়ের বৃষ্টি শুরু হতেই বাঙালি ছোটে মাছের বাজারে ইলিশের খোঁজে। শারদ উৎসবের শুরু হতেই হেঁসেলে গিন্নি খোঁজেন শীতের সব্জী। ঠিক সেই সময় বিজয়ার নাড়ু নিয়ে ব্যস্ত থাকেন ঠাকুমা দিদিমারা। শারদ উৎসব পেরোলেই শীতের আমেজ। নতুন ধান ঘরে ওঠার পালা। এবার বাঙালির সন্ধানে আসে খেজুরের রস ও খেজুর গুড়। নভেম্বর মাসের মধ্যে হালকা শীতের আমেজ অনুভুত হয় ধীরে ধীরে শীত জাঁকিয়ে পড়তে থাকে। মাঝে মাঝে আকাশ মেঘলা থাকায় শীতের কনকনে ভাব হাড়ে হাড়ে টের পায় মানুষজন।

আর সেইসময় আপামর বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠে পুলির অনুষ্ঠান। সেই পিঠে পুলি তৈরিতে চাই নলেন গুড়। হরিরামপুর ব্লকের বরভিটা গ্রামের সুরেশ সরকার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে সেই রস জাল দিয়ে নলেন গুড় তৈরি করেন। প্রতি বছরই খেজুর গাছ থেকে রস বের করে নলেন গুড় তৈরি করেন বছর ৫০ এর সুরেশ বাবু। তিনি প্রায় ৮ বছর ধরে এই কাজ করে আসছেন। সুরেশ বাবু জানান, প্রতি বছর ১৪ থেকে ১৫ টি খেজুর গাছ কিনে নিতে হয়। সেই গাছ থেকে রস নেওয়ার পর কমপক্ষে সাতদিন বিশ্রাম দিতে হয়। একে বলে শুকি। এই শুকি না দিলে খেজুর রসের স্বাদ থাকবে না। ফলে নলেন গুড়ের স্বাদও কমে যাবে।

সুরেশ বাবুর এই গুড় তৈরির কাজে হাত লাগান ওনার দুই ছেলে উত্তম সরকার ও শুভ সরকার। এই নলেন গুড়কে বাজারজাত করার জন্য তিনি হরিরামপুর হাট, পাতিরাজ হাট সহ এলাকার বিভিন্ন হাটে এই নলেন গুড় ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করেন। তিনি বলেন বর্তমানে দ্রব্যমূল্য এর দাম আকাশ ছোঁয়া কিন্তু গুড়ের দাম সেভাবে পাওয়া যায় না।

এলাকাবাসী বিমান হালদার জানান, সুরেশ বাবুর তৈরি নলেন গুড়ের একটা নাম আছে এলাকায় যার জন্য আসে পাশের এলাকা থেকে মানুষজন চলে আসেন সুরেশ বাবুর বাড়ি গুড় কিনতে। তবে গত দুদিন ধরে চলতে থাকা উত্তুরে ঠান্ডা কনকনে হাওয়া উত্তরবঙ্গ জুড়ে জাঁকিয়ে ঠান্ডার থাবা ফেলেছে তার রেশ পাওয়া যাচ্ছে হাড়ে হাড়ে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*