রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থায় আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে, এই অভিযোগ করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় পরিস্থিতির জন্য সিস্টেমকেই দায়ী করলেন ৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সহ পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে ডাক পাওয়ার পরেও হাজির না থাকতে পেরে রীতিমতো ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল। আর সেই কারনেই শিক্ষায় আইনের শাসন ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজভবনে ডেকে পাঠালেন তিনি। ১৫ দিনের মধ্যে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা করতে বলেছেন ৷ পাশাপাশি ১৩ জানুয়ারি রাজভবনে বৈঠক ডাকলেন রাজ্যপাল ৷ রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে তিনি বৈঠক করবেন সেদিন ৷
মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে থাকতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, উপাচার্য অনুষ্ঠান সূচিসহ আমায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু আমি ঢুকতে পারলাম না। মনে হচ্ছে সব কিছু যেন রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এর আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট আমায় না জানিয়েই বাতিল হয়ে গেল। পরপর পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটলো। বিষয়টি একজন উপাচার্যের কাছে অপমানজনক।
যাদবপুরের ঘটনার পর আজ রাজ্যপাল জানিয়েছেন, ১৩ জানুয়ারি রাজ্যের শিক্ষাসচিব সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন তিনি। তিনি বলেন, সিস্টেমটাকে বদলাতে হবে । শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড তৈরি করে । শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে দিলে জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। সব উপাচার্যের কাছ থেকে জানতে চাইব সমস্যাটা কোথায়। উপাচার্যদের বলা হয়েছে ৬ জানুয়ারির মধ্যে তাঁরা আসতে পারবেন কি না সে বিষয়টি স্পষ্ট করে জানাতে ।
রাজভবন সূত্রে খবর, অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই এই চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। অতীতে দেখা গেছে মাত্র দু’ঘণ্টা আগে তাঁকে জানানো হয়েছে যে বৈঠকে আসতে পারবেন না সরকারি আধিকারিকরা। কোনও উপাচার্য যদি না আসার কথা লেখেন, সে ক্ষেত্রে আচার্য হিসেবে তিনি বিকল্প ব্যবস্থা নেবেন। সে কারণেই সাতদিন আগে জানাতে বলা হয়েছে উপাচার্যদের।
পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসার আবেদনও জানিয়েছেন। এর আগেও একাধিক বিষয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বৈঠকে বসার আবেদন জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু সেই বৈঠকগুলি হয়নি। এখন দেখার রাজ্যপালের ডাকে ১৫ দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের জন্য রাজভবনে আসেন কি না ৷
উল্লেখ্য, আজ সকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাজ্যপাল পৌঁছালে তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয় ৷ দেওয়া হয় গো-ব্যাক স্লোগান ৷ দেখানো হয় কালো পতাকা ৷ এই পরিস্থিতিতে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, রাজ্য সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে খাঁচাবন্দী করে রাখতে চাইছে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রিমোট দ্বারা পরিচালিত হয়ে এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৷ ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে ৷ তবে সেই সঙ্গে রাজ্যপাল দাবি করেন , যাদবপুরে আজকের বিক্ষোভে পড়ুয়ারা অংশ নেননি ৷
Be the first to comment