এবার দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বাংলার ট্যাবলো থাকছে না। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পাঠানো তিনটি ট্যাবলোর প্রস্তাবই খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্র। আর এই ইস্যুটি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর জারি। এদিকে, প্রজাতন্ত্র দিবসে এবার দিল্লির রাজপথে বাংলার ট্যাবলো না থাকার দায় রাজ্য সরকারের ঘাড়েই চাপালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীাপ ঘোষ।
রাজ্যের সমালোচনা করে দিলীপ বলেন, ‘সিস্টেম অনুযায়ী হয়নি, তাই বাদ দিয়েছে।’ বাংলার ট্যাবলো বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে পরোক্ষে কেন্দ্রের পাশেই দাঁড়িয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুও। রাজ্যকে কটাক্ষ করে সায়ন্তনের মন্তব্য, ‘রাজ্যের কন্যাশ্রী ট্যাবলো রাজ্য তথা দেশকে নিচু দেখানোর চেষ্টা করছে। তাই বাংলার ট্যাবলো বাতিল করে কেন্দ্র সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এ বছর দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে মোট ২২টি ট্যাবলো অংশ নেবে বলে জানা গিয়েছে। ১৬টি রাজ্যের ট্যাবলো ও বাকি ৬টি বিভিন্ন মন্ত্রকের ট্যাবলো। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণের জন্য ৩২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং ২৪টি মন্ত্রক ও দফতর কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছিল। কেন্দ্র-রাজ্য এবং মন্ত্রক-দফতর মিলিয়ে মোট ২২টি ট্যাবলোকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এ বছর দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার ‘কন্যাশ্রী’,‘সেভ গ্রিন, স্টে ক্লিন’,‘জল ধরো, জল ভরো’,এই তিনটি ট্যাবলোর প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারেরও প্রায় একই রকম কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে। মূলত সেই যুক্তি দেখিয়ে রাজ্যের ট্যাবলোগুলির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিকে, দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে রাজ্যের ট্যাবলো বাদ দেওয়ায় কেন্দ্রকেই সমর্থন করেছেন এরাজ্য়ের বিজেপি নেতারা। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সিস্টেম অনুযায়ী রাজ্য় সরকার এগোয়নি বলেই, কেন্দ্র রাজ্যকে এবার বাদ দিয়েছে। ২০১৮ সালেও একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। পশ্চিমবঙ্গ সরকার গায়ের জোরে সব কিছু করতে চায়। সব জায়গায় এসব চলবে না।
এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটির সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা উচিত।’ এরই পাশাপাশি বিজেপির অপর নেতা সায়ন্তন বসুও কেন্দ্রের পাশেই দাঁড়িয়েছেন৷ উলটে রাজ্য সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেচেন সায়ন্তন। বিজেপির এই নেতার অভিযোগ, ‘দেশকে নিচু দেখানোর চেষ্টা করছিল রাজ্য সরকার। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বাংলার ট্যাবলো বাদ দিয়ে উচিত কাজই করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।’
অন্যদিকে, ওয়াকিবহাল মহলের মত প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বাংলার ট্যাবলো বাদ পড়ায় কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত কয়েকগুণ বেড়ে গেল। এমনিতেই নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র-বিরোধী অবস্থান নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধেও ক্রমাগত সুর চড়াচ্ছেন কেন্দ্রের মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিজেপি নেতারা। আর এই আবহেই দিল্লির প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলার ট্যাবলো বাদ ইস্যুটি কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত আরও বাড়িয়ে দিল।
Be the first to comment