সিএএ প্রসঙ্গে কোনও রাজ্যেরই মত নেয়নি কেন্দ্র

Spread the love

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিধি প্রণয়নের সময় কোনও রাজ্যের পরামর্শ নেয়নি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। জানিয়েছেন মন্ত্রকেরই এক শীর্ষ আধিকারিক। যা সিএএ বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ ঘিরে দেশজুড়ে প্রতিবাদ চলছে। পড়ুয়া থেকে বিজেপি বিরোধী সব রাজনৈতিক দলই নয়া আইনের প্রতিবাদ করেছে। ইতিমধ্যেই ২৬ জন সিএএ প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছে। আইন ঘিরে রাজনৈতিক বিতণ্ডা তুঙ্গে। বিরোধীদের দাবি, ধর্মের ভিত্তিতে মুসলমানদের নিশানা করে সিএএ তৈরি করেছে মোদী সরকার। পাল্টা, কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এই আইনের সহায্যে কারোর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার হবে না, উল্টে সবাইকে নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘সিএএ কীভাবে বলবৎ করা যায় তা নিয়ে চর্চা চলছে। সব দিক ভালভাবে খতিয়ে দেখা হয়েছে। আইন প্রণয়নের সময় আমরা কোনও রাজ্যের থেকেই পরামর্শ চাইনি। সেটার প্রয়োজনও ছিল না। বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার আগেই যথেষ্ট পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল।’ মন্ত্রকের তরফে জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে সিএএ নিয়ে মামলা চললেও তার উপর স্থগিতাদেশ জারি করা হয়নি। কেন্দ্রকে তাদের মতামত জানাতে বলা হয়েছে। ফলে আইন ঘিরে কাজ এগনোর ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই।

গত ডিসেম্বরে সংসদে পাস হয় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। এরপরই গোটা উত্তর পূর্ব, মূলত আসামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদ আন্দোলনে মুখর হয় গোটা আসাম। প্রাণ যায় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীর। চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয় রাজ্যের বিজেপি সরকারকে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়েছিলেন আইনের বিষয়ে আসাম সরকার কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে। যা ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে।

আসাম সরকারের চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু কোনও পরামর্শ কোনও রাজ্যের থেকে কেন্দ্র চায়নি বলে দাবি করেন মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কোন রাজ্যের থেকেই কোনও ধরনের পরামর্শ চায়নি। আইন পাস হয়েছে। এবার তা লাগু করা কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়।’

সিএএ-তে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যেসব অ-মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ (হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রীষ্টান, শিখ পার্সি) বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্থানে ধর্মীয় নীপিড়নের শিকার হয়ে ভারতে এসেছেন তাদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিক জানিয়েছেন, কাদের ওপর কিসের ভিত্তিতে এই আইন লাগু হবে তারই আলোচনা চলছে। কোন নথির ভিত্তিতে কোনও ব্যক্তি ধর্মীয় শরণার্থী হিসাবে গণ্য হবেন তা দেখা হচ্ছে।

বাংলা, কেরালা, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাব, ছত্তিশগড়, রাজস্থান ও মহারাষ্ট্র সরকার ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে তারা সিএএ লাগু করবে না। তালিকায় নাম রয়েছে বিজেপির শরিক জেডিইউ পরিচালিত বিহারের নামও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকের মতে, এই আইনের সঙ্গে রাজ্যের কোনও সম্পর্কই নেই। কেন্দ্রীয় তালিকাভুক্ত বিষয় এই আইন। সিএএ লাগুর জন্য রাজ্যগুলোর উদ্দেশ্যে কেন্দ্র আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করবে।

ভছর শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল বলেছেন, ‘সিএএ লাগু করব না বলে বিরোধী দল পরিচালিত রাজ্য সরকার সংবিধান বিরোধী দাবি করছে। সংসদে আইন পাস হয়েছে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে। তাই রাজ্যগুলো সিএএ মেনেই চলতে হবে। জাতীয় স্বার্থে এটা জরুরি।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*