কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বর্ধমান স্টেশনের মূল অংশ। মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হল বর্ধমান স্টেশন চত্বর। আর এই ঘটনার জন্যে রেলের রক্ষণাবেক্ষনকেই দায়ী করেছেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী তথা বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী।
তিনি জানিয়েছেন, বেসরকারীকরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে রেল, আজ বর্ধমান স্টেশনের ঘটনা তারই প্রমাণ। যাত্রী সুরক্ষা, স্টেশনের রক্ষণাবেক্ষণের দিকে আর নজর দিতে চাইছে না ভারতীয় রেল, এমনটাই অভিযোগ সাংসদের। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, রেল বলছে রেলের ভাড়ার শূন্য। স্বাভাবিকভাবেই বরাদ্দ হচ্ছে না টাকা। অধীরের মতে, ১০০ টাকার পরিষেবা দিতে গেলে রেলের ১৪০ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। এতটাই অবস্থা খারাপ। তাই আর বাড়তি খরচ করতে চায় না রেল, এমনটাই মনে করেন তিনি।
শুধু তাই নয়, অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন ভাড়া বাড়লেও দিন দিন পরিষেবা খারাপ হচ্ছে। মানুষ বাড়তি ভাড়া দিতে রাজি, কিন্তু তার উলটে নুন্যতম পরিষেবা চায়। কিন্তু এতটাই অবস্থা খারাপ যে তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমি চাইব রেল যেন যাত্রী সুরক্ষার দিকে নজর দেয়। দেশের সমস্ত রেল স্টেশন বিশেষ করে যেগুলো বহু পুরনো সেই স্টেশনগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দিকে যেন নজর দেয় রেল।
একই সঙ্গে কেন্দ্রের মোদী সরকারকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন এই কংগ্রেস নেতা। তাঁর অভিযোগ, বড়বড় নেতারা বড়বড় ভাষন দিচ্ছেন। কিন্তু কাজের বেলায় সবটাই শূন্য! এটাই আমাদের ডিজিটাল ভারতের নমুনা বলেও কটাক্ষ অধীর চৌধুরীর।
প্রসঙ্গত, শনিবার ভেঙে পড়ে বর্ধমান স্টেশনের একাংশ। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে স্টেশনের এক অংশ। ভেঙে পড়া ধ্বংসস্তুপের মধ্যে অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা। রাত ৮টা নাগাদ ভয়ঙ্কর এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্টেশনের মধ্যে যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি বেঁধে যায়। ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আরপিএফ, দমকল সহ রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ভেঙে পড়া ধ্বংসস্তুপের মধ্যে কেউ আটকে রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত ঘটনায় দুজন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তাঁদেরকে বর্ধমান স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।জানা যাচ্ছে, ঘটনার সময় স্টেশনে বহু দূরপাল্লার এবং লোকাল ট্রেন ছিল। ফলে অফিস ফেরত ট্রেন যাত্রীরা তো ছিলই, একেবারে সন্ধ্যায় এমন ঘটনা ঘটায় বহু মানুষ স্টেশন চত্বরে ছিল। আর এর মধ্যেই ভেঙে পড়ে স্টেশনের মূল ভবনের একাংশ। ফলে অনেকেই এই ধ্বংসস্তুপের মধ্যে আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Be the first to comment