রোজদিন ডেস্ক :- কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের অভিযানে শিয়ালদহের বৈঠকখানা রোডে উদ্ধার প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র। এদিকে একেবারে ঘিঞ্জি এলাকায় এই আগ্নেয়াস্ত্র এল কিভাবে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এসটিএফ গোটা এলাকাটি ঘিরে ফেলে অভিযান চালায়। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরাও গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত। সুরেন্দ্রনাথ কলেজের কাছেই এই অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
উপ নির্বাচনের আগেই খোদ কলকাতার বুক থেকে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করল এসটিএফ। শনিবার রাতে সুরেন্দ্র নাথ কলেজের কাছে সাদা পোশাকে পুলিশি অভিযান চালিয়ে এই সাফল্য আসে কলকাতা পুলিশের। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় মহম্মদ ইসরাইল নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, এসটিএফের কাছে আগেই খবর গিয়েছিল যে বৈঠকখানার রোডের ওই নির্দিষ্ট এলাকায় অস্ত্র মজুত করা হয়েছে। এরপরই সেখানে আসে এসটিএফের গোয়েন্দারা। এরপর তাঁরা গোপনে অভিযান চালিয়ে ৭ এমএম দুটি পিস্তল, সিঙ্গল শটার ৩টি রয়েছে। ৯০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করেছে। আপাতত প্লাস্টিকের কন্টেনারে এই অস্ত্রগুলি রেখেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৫৩ বছর বয়সি মহম্মদ ইসরাইল কলকাতার বেলেঘাটা রোড সংলগ্ন এলাকায় অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিলেন। ইসরাইলের আসল বাড়ি বিহারের ঝাড়খণ্ডের হান্টারগঞ্জ থানার অন্তর্গত কেতারীওয়ার গ্রামে। তবে তিনি বেশ কিছুদিন ধরে কলকাতার রাজাবাজার এলাকায় বসবাস করছিলেন। পুলিশের কাছে গোপন সূত্রে খবর আসে যে তিনি অস্ত্র পাচারের জন্য ডেলিভারি দিতে আসছেন। সেইমতো এসটিএফ-এর একটি বিশেষ দল সেখানে গিয়ে অভিযান চালায় এবং তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি বিহারের মুঙ্গেরে তৈরি। এই অস্ত্রগুলির বেশিরভাগই অবৈধভাবে ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে পুলিশ মনে করছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ইসরাইল মূলত একটি অস্ত্রপাচার চক্রের ‘ক্যারিয়ার’ হিসেবে কাজ করছিল। তার কাজ ছিল বিহার থেকে কলকাতায় অবৈধ অস্ত্র এনে বিক্রি করা। গতকাল সে নতুন করে মুঙ্গের থেকে অস্ত্রের চালান সংগ্রহ করে কলকাতায় পৌঁছায় এবং আজই সেই অস্ত্র রাজাবাজার এলাকায় একটি নির্দিষ্ট ডেলিভারি পয়েন্টে নিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশি সূত্রে আরও জানা গেছে, রাজাবাজারে এই ধরনের অবৈধ অস্ত্র কেনাবেচার একটি গোপন নেটওয়ার্ক রয়েছে এবং ইসরাইল সেখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিল।
রাজাবাজার ও বেলেঘাটা রোড সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তারা জানাচ্ছেন, “আমরা কখনও ভাবিনি যে এই এলাকায় এমনভাবে অস্ত্র পাচার হয়। আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ, অবিলম্বে এর পিছনের চক্রটিকে ধরা হোক এবং এলাকাকে সুরক্ষিত করা হোক।”
Be the first to comment