
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- কাউকে কিছু না জানিয়েই কলকাতার অন্যতম হেরিটেজ বিল্ডিং তথা কলকাতার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী কফি হাউসের নিচের পিলার ভেঙে নির্মাণ কাজ চলছিল। কফি হাউস কর্তৃপক্ষ এবং সেখানে আসা লোকজনের চোখে পড়তেই বিষয়টি সামনে আসে। বন্ধ করা হয় নির্মাণ সম্প্রসারণের কাজ। এরপরই গোটা বিষয়টি জানানো হয় কলকাতা পুরসভা কলকাতা পুলিশকে। তবে কে বা কারা এই কাজ করছিল তা জানা যায়নি। গোটা বিষয়টি নিয়ে কফি হাউস সোশ্যাল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে কলকাতা পুরসভায় একটি ডেপুটেশনও জমা দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, জনৈক এক ব্যবসায়ী কফি হাউসের নীচ তলার একটি জায়গা কিনে, সেখানে সোমবার রাত থেকেই পিলারের একাংশ ভেঙে সম্প্রসারণের কাজ চালাছিল। সোমবার সকালে কফি হাউস কর্তৃপক্ষের নজরে বিষয়টি এলেই তাঁরা এই সম্প্রসারণের কাজটিতে বাধা দিয়ে বন্ধ করে দেয়। এরপরই ১০০ ডায়াল করে খবর দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশকে। পাশাপাশি, কলকাতা পুরসভা কেউ পুরো বিষয়টি জানানো হয়। এরপরই তড়িঘড়ি করে কলকাতা পুলিশ ও কলকাতা পুরসভার আধিকারিকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে আপাতত সম্পূর্ণ কাজটিকে বন্ধ রাখা হয়। এবং কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে কাজ বন্ধের নোটিশও লাগিয়ে দিয়ে আসা হয়।
এদিকে, বুধবার কলকাতা পুরসভায় এসে কফি হাউস সোশ্যাল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে একটি ডেপুটেশন জমা দেওয়া হয়। যদিও, ওই সময় কলকাতা পুরসভায় মেয়র না থাকায় অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের সঙ্গে মেয়রের দেখা হয়নি। কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁরা মেয়রের সঙ্গে দেখা করবেন বলেই জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অচিন্ত্য লাহা। এদিন তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘যেভাবে নির্মাণকাজ হচ্ছিল তাতে বিল্ডিংটাই বিপর্যয়ের স্বীকার হতে পারে। তাই এমন কাজ যাতে না হয়, পুরসভা গোটা বিষয়টি নজরে রাখুক, সেই কারণে আমরা একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়ে গেলাম।’ পাশাপাশি তারা চান, একটি কমিটি গঠন করে কফি হাউসের মতো হেরিটেজ বিল্ডিংটির তদারকি করা হোক।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এরকম একটি হেরিটেজ বিল্ডিংকে কি ভাঙ্গা যায়? যদি ভাঙ্গা যায় তাহলে কে বা কারা এই অনুমতি দিয়েছে? আর যদি অনুমতি ছাড়াই এই ভাঙ্গাভাঙ্গির কাজ হয় তাহলে ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ওই জনৈক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হলো না কেন?
প্রসঙ্গত, কফি হাউসের দোতলার অংশ ছাড়া একতলা এবং তিন তলার অংশ বেসরকারি সংস্থার হাতে। এবার সেই অংশটা ভাড়া দেওয়া না পুরোপুরি বিক্রি করে দেওয়া তাও স্পষ্ট নয়। তাই এই বিল্ডিংয়ে কারা, কতটা নির্মাণ কাজ করতে পারে বা আদৌ করতে পারে কিনা তা নিয়ে থেকে যাচ্ছে ধন্দ।
Be the first to comment