রোজদিন ডেস্ক :-
গত সপ্তাহেই বীরভূমে মহিষাগড়িয়া গ্রামের কাছেই পাথর ভাঙার কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারান তিন শ্রমিক। সেবার পাথরের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল। আর এবার ভাদুলিয়ার গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড কোলিয়ারি (জিএমপিএল)-তে কয়লা ভাঙতে গিয়ে বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন অন্তত সাত জন শ্রমিক।
সোমবার সকালে বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের লোকপুর থানার ভাদুলিয়া গ্রামে বিস্ফোরণ হয়। গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড কোলিয়ারিতে সেই সময় কয়লা ভাঙছিলেন বেশ কয়েকজন শ্রমিক। হঠাৎই বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান সাত শ্রমিক। বাকি আরও অনেকেই যাঁরা আশেপাশে ছিলেন, তাঁরা আহত হয়েছেন গুরুতর ভাবে। সঙ্গে সঙ্গেই ওই শ্রমিকদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা যাচ্ছে, অসাবধানতার জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরপরই ওই খনির আধিকারিক ও উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয়। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছেছে। আরও কেউ আহত বা বিস্ফোরণে আটকে পড়েছিলেন কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবার সকালে গঙ্গারামচক কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। কিন্তু ভিতরে শ্রমিকরা যে কাজ করছিলেন, তা খেয়াল ছিল না কারও। আর সেই অসাবধানতা থেকেই শ্রমিকরা চাপা পড়ে যান। পরে ৫ জনের দেহ উদ্ধার হয় সেখান থেকে। পরে আরও দুজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার পর খনির উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ। এই মুহূর্তে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা। মোতায়েন বিশাল পুলিশ বাহিনী।
জানা গিয়েছে, খয়রাশোলের এই খনিটি পিডিসিএলের লিজ নেওয়া। তা রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থা। সেই খনিতেই এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটল। নেহাৎই অসাবধানতাবশত বিস্ফোরণ ঘটল? কয়লা উত্তোলনের জন্য বিস্ফোরণ ঘটানোর সময় ভিতরে কেউ রয়েছে কি না, তা দেখা হল না কেন? এর দায় কার? এসব প্রশ্ন উঠছেই। তবে বেশি সন্দেহজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এলাকা ছেড়ে খনি কর্তৃপক্ষের আধিকারিকদের চলে যাওয়া। তবে কি বিস্ফোরণের নেপথ্যেয়ে কোনও ষড়যন্ত্র আছে? তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে উদ্ধারকাজ এবং সেইসঙ্গে এলাকার উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই বীরভূমের মহিষগড়িয়ার কাছের এক খাদানে ধস নেমেছিল। আর তাতেই পাথরের নীচে চাপা পড়ে সেখানেই মারা যান তিন শ্রমিক। মৃত শ্রমিকদের পরিবারের তরফে অভিযোগ ছিল বৃষ্টির জন্য খাদনে ধস নামছিল। বারবার বারণ করা সত্বেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি। তাতেই খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে প্রাণ হারান শ্রমিকরা। আর আবারও ক’টা দিন কাটতে না কাটতেই সেই বীরভূমেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন সাত জন কয়লাশ্রমিক।
Be the first to comment