১৯৮৪ সালে দিল্লিতে শিখ গণহত্যা থামাতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ভারতরত্ন কেড়ে নেওয়া হোক। এই মর্মে নাকি শুক্রবার প্রস্তাব পাশ হয়েছে দিল্লি বিধানসভায়। আপের বিধায়করা সকলে নাকি এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। চারদিকে একথা জানাজানি হতেই শুরু হয় হইচই। এরই মধ্যে জানা যায়, রাজীব গান্ধীকে নিয়ে বিতর্কের জেরে বিধায়ক অলকা লাম্বাকে দল ছাড়তে বলেছে আপ। অলকা নিজেও জানিয়েছেন, তিনি দল ছাড়তে রাজি।
কেন আপ অলকাকে দল থেকে তাড়াতে চায়, তা নিয়ে থেকেই যাচ্ছে রহস্য। এক্ষেত্রে আপ নেতারা বলছেন একরকম, অলকা নিজে বলছেন ঠিক তার উলটো। আপ নেতারা বলছেন, অলকা নাকি রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করানোর জন্য জেদাজেদি করেছেন। অন্যদিকে অলকা বলছেন, রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে ওই প্রস্তাবে তাঁর ঘোরতর আপত্তি ছিল। তাই তিনি দল ছাড়তে রাজি হয়েছেন।
অলকা আগেও পার্টির নানা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। তিনি একসময় ভোটযন্ত্র নিয়ে পার্টির মতামত মানতে অস্বীকার করেছিলেন। এদিন তিনি বলেন, রাজীব গান্ধী দেশের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাঁর ভারতরত্ন কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব আমি সমর্থন করি না। আমি দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলেছি বলে আমাকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। আমি ইস্তফা দিতে রাজি।
আপ পরে এক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ’৮৪-র গণহত্যা নিয়ে বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হয়েছে বটে কিন্তু রাজীব গান্ধীর প্রসঙ্গ সেখানে ওঠেনি। প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, দিল্লির দাঙ্গায় যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাঁদের দ্রুত বিচার পাওয়া উচিত। এতদিন পরেও যদি তাঁরা বিচার না পান, তাহলে সাধারণ মানুষ বিচারবিভাগ এবং তদন্তকারী সংস্থাগুলির প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে।
আপের বক্তব্য এই প্রস্তাব ছাপানো অবস্থায় বিলি করা হয়েছিল। কিন্তু এক বিধায়ক তার ওপরে হাতে লেখেন, রাজীব গান্ধীর ভারতরত্ন কেড়ে নেওয়া হোক। তিনি ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করেছিলেন। ছাপানো প্রস্তাবের ওপরেই ভোটাভুটি হয়েছে। হাতে লেখা অংশের ওপরে কেউ ভোট দেয়নি। অর্থাৎ রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রস্তাব নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
দিল্লি কংগ্রেস ওই প্রস্তাবের কথা জানার পরেই দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়। দলের মুখপাত্র বলেন, এতদিনে আপের প্রকৃত চরিত্র বোঝা গেল। আপ আসলে বিজেপিরই বি টিম। ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধী জঙ্গি হানায় নিহত হওয়ার পরে তাঁকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়া হয়।
Be the first to comment