শেষরক্ষা হল না। শেষ হয়ে গেল চিকিৎসকদের আপ্রাণ লড়াই। শুক্রবার রাতে মারা গেলেন সকলেন প্রিয় অভিজিত। বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। ছেড়ে গেলেন স্ত্রী, এক কন্যা এবং বাবা–মা’কে। তাঁর মৃত্যুতে সাংবাদিক মহলে এবং ক্রীড়া জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কিছুদিন আগেই এক ক্রীড়া প্রশাসকের ছেলের বিয়েতে নিমন্ত্রিত ছিলেন। অফিসের কাজ সেরে সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন। নিমন্ত্রণ সেরে অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার মুহূর্তেই চরম দূর্ঘটনা। হৃদরোগে আক্রান্ত হন সকলের প্রিয় বর্তমান পত্রিকার ক্রীড়া সাংবাদিক অভিজিত সরকার। অন্যান্য সাংবাদিক বন্ধুরা সঙ্গে সঙ্গে কাছেই এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান অভিজিতকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
জনমন জনমত’ নামে এক সাপ্তাহিক পত্রিকায় কর্মজীবন শুরু করেছিলেন অভিজিত সরকার। সেখানে বেশ কিছুদিন কাজ করার পর যোগ দেন ‘প্রাত্যহিক সংবাদ’ পত্রিকায়। ‘প্রাত্যহিক সংবাদ’–এ ক্রীড়া সাংবাদিকতা করছিলেন। তারপর সেখান থেকে আইএফএ–র পত্রিকা ‘কিক অফ’–এ কিছুদিন কাজ করেন। এরপর যোগ দেন ‘খবরের কাগজ’ নামে একটা পত্রিকায়। সেখান থেকে চলে যান ‘গণশক্তি’–তে। ‘গণশক্তি’ পত্রিকাতেই অভিজিতের প্রতিভা দারুণভাবে প্রকাশ পায়। তারপর যোগ দেন ‘বর্তমান’ পত্রিকায়। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ‘বর্তমান’ পত্রিকার সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন।
ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন অভিজিত সরকার। দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে যেমন সুসম্পর্ক ছিল, তেমনই ক্লাব কর্তা, খেলোয়াড়, ক্রীড়া প্রশাসকদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক ছিল অভিজিতের। দেশের মধ্যে বিভিন্ন ফুটবল প্রতিযোগিতা কভার করেছেন। ফুটবলারদের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক ছিল।
অভিজিত সরকারের মৃত্যুতে শোকাহত গোটা ক্রীড়ামহল। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েই ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের পক্ষ থেকেও শোকজ্ঞাপন করা হয়েছে। কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের সদস্য ছিলেন অভিজিত সরকার। ক্লাবের যে কোনও অনুষ্ঠানেই হাজির থাকতেন। কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের সভাপতি সুভেন রাহা অভিজিতের প্রয়াণকে বাংলার ক্রীড়া সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বড় ক্ষতি বলে অভিহিত করেছেন। অভিজিতের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোরও আশ্বাস দিয়েছেন।
Be the first to comment