
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:– শুক্রবার বাজেট বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধোনা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মোদি সরকারকে ‘রিভার্স রবিনহুড’ বলে খোঁজা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি রামায়ণের ‘সোনার হরিণ’-এর প্রসঙ্গ উঠে এল তাঁর বক্তৃতায়। সোনার হরিণ দেখিয়ে কৌশলে সীতাকে অপহরণ করার সেই ছক মনে করিয়ে দেন অভিষেক। বাজেটে একাধিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এই বাজেট করা হয়নি বলে দাবি করলেন। একের পর এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে অভিষেক ব্যাখ্যা দিলেন, সাধারণ মানুষের সামনে আসলে একটি ‘ইলিউশন’ তুলে ধরেছে মোদি সরকার।
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে ‘রিভার্স রবিনহুড’-এর সরকার বলে কটাক্ষ করলেন অভিষেক। তাঁর দাবি, রবিনহুড বড়লোকের থেকে লুট করে গরিবদের দিতেন। আর এই সরকার গরিবের টাকা লুট করে ধনীদের দিচ্ছে। অভিষেকের অভিযোগ, “নির্মলা সীতারমণের বাজেট ভুল বোঝানোর বাজেট। বিজেপির প্রোপাগান্ডার বাজেট। দেশের অর্থনীতি রাবণের হাতে চলে গিয়েছে। উন্নয়নের ধুয়ো তুলে এই বাজেটে অর্থনীতির বিপর্যয়কে বেমালুম লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।” পাশাপাশি অভিষেক বলেন, ‘রামায়ণে যে ভাবে মারীচ হরিণের ছদ্মবেশ ধারণ করে সীতা মা-কে ঠকিয়েছিলেন। এই সরকার অর্থনৈতিক বিপর্যয়কে লুকিয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছে।’ তাঁর দাবি, এই বাজেটে আয়কর ছাড়, অর্থনৈতিক সংস্কার, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কথা বলেও পরোক্ষ কর, মুদ্রাস্ফীতি-র কথা লুকিয়ে রাখা হয়েছে জনসাধারণের কাছ থেকে।
এদিন অভিষেকে আরও দাবি করেন, ‘নির্মলার বাজেট হাফ ট্রুথ, হাফ ফেডারেলিজম, হাফ মিনিস্টার, হাফ বেকড অ্যানসার, হাফ অ্যাকাউন্টেবিলিটি, হাফ ডেলিভারির বাজেট’।
এরপরই তিনি বলেন এই বাজেট বাংলা বিরোধী বাজেট। পাশের রাজ্য বিহারে শুধু বিজেপি সরকারে আছে বলে বিহার বোনাস পাচ্ছে। আর বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় নেই বলে বাংলা পাচ্ছে বঞ্চনা। বাংলার জন্য উল্লেখযোগ্য একটি আর্থিক প্যাকেজ বা বড় প্রকল্প ঘোষণা করা হয়নি। উলটে বাংলা বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা পাওনা। সেই বকেয়াও মেটানো হচ্ছে না। অভিষেকের ভাষণে একদিকে যেমন রামায়ণ থেকে রিভার্স রবিনহুডের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে অন্যদিকে তেমনই উঠে এসেছে আমির খানের ছবি থ্রি ইডিয়টসের প্রসঙ্গও। অভিষেক দাবি করেন, থ্রি ইডিয়টসের ভাইরাসের মতোই এই বাজেট শুধুই র্যাঙ্কিংয়ের কথা বলে, শুধুই সংখ্যাতত্ত্বের কথা বলে, আসল সমস্যা এড়িয়ে যায়। ব্রিটিশ আমলে যেমন সরকার মুখে সংস্কারের কথা বলত কিন্তু ভারতের সম্পদ লুট করত, এই বিজেপি সরকারও সেটাই করছে।
Be the first to comment