সোমবার থেকেই চারদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গে দলের সাংগঠনিক শক্তি-বৃদ্ধিই অভিষেকের এবারের সফরের মূল উদ্দেশ্য। আজ থেকে শুক্রবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
চার দিনের এই সফরে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় কর্মীসভা সারবেন তৃণমূল সাংসদ। এবারের সফরে একটি মাত্র প্রকাশ্য সভা করার কথা রয়েছে অভিষেকের। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে দলের প্রকাশ্য সভায় বক্তব্য রাখবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
উত্তরবঙ্গে ক্রমেই শক্তি বাড়ছে বিজেপির। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের একাধিক তৃণমূল নেতা যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভালো ফল করেছে গেরুয়া শিবির। উল্টোদিকে, সংগঠন ক্রমশই দুর্বল হয়েছে তৃণমূলের।
উত্তরবঙ্গের চা বাগান লাগোয়া এলাকাগুলিতে তৃণমূলের সংগঠনগুলিও হাত-বদল হয়েছে। উত্তরে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। একথা ভালোই বুঝেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
সেই কারণেই এবার অভিষেকের উত্তরবঙ্গ সফর। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই তৃণমূলের খারাপ ফল হয়েছে। উত্তরবঙ্গের ৫৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট কমেছে ঘাসফুল-শিবিরের।
একদিকে, ভোটব্যাঙ্কে ধ্বস নামা ও অন্যদিকে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট হওয়া, দু’য়ের জাঁতাকলে বিধানসভা ভোটের আগে বেকায়দায় তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এর আগেই উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও গৌতম দেব দলের কোন্দল মেটাতে তৎপরতা নিয়েছেন।
তবে ফল আশানুরূপ হয়নি। উল্টে দিন যত এগিয়েছে দলে কোন্দলও ততই বেড়েছে। কোচবিহারে দলের অন্তর্কলহ যথেষ্ট মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের কাছে। দল ছেড়েছেন কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মিহিরবাবু। দলে আত্মসম্মান নিয়ে কাজ করতে পারছিলেন না বলেই দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
বিধানসভা ভোটের আগে এবার ‘বেসুরো’ গাইছেন কোচবিহারের আর এক তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহও। সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি বেশ দুর্বল হয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। সাংগঠনিক সেই ফাঁকফোকর মেরামতের কাজেই এবার নজর অভিষেকের।
জানা গিয়েছে, আজ থেকে টানা চারদিন উত্তরবঙ্গে দলের নেতৃত্বের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলবেন তৃণমূলের ‘যুবরাজ’। আসন্ন বিধানসভা ভোটে পুরো শক্তি নিয়ে ঝাঁপাতে আরও কী কী পদক্ষেপ জরুরি, তা নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। অন্তর্কলহ মিটিয়ে একজোট হয়ে বিজেপি-সহ বিরোধীদের সঙ্গে লড়াইয়ের বার্তাই দেবেন অভিষেক।
Be the first to comment