সামনেই গোয়া বিধানসভা নির্বাচন। নির্বাচনের আগে দলের শেষ মূহূর্তের প্রস্তুতি দেখে নিতে তিনদিনের গোয়া সফরে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমের সৈকত রাজ্যে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ডায়মন্ড হারাবারের তৃণমূল সাংসদ। সেখানে কংগ্রেস ও বিজেপিকে চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের ঘোষিত ‘নম্বর ২’। তবে জাতীয় রাজনীতির পাশপাশি এই প্রথম সাম্প্রতিক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তৈরি হওয়া যাবতীয় বিতর্কে মুখ খুললেন অভিষেক।
অভিষেকের ডায়মন্ড হারবার মডেলকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করেছিলেন শ্রীরামরপুরের বর্ষীয়াণ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া অন্য কাউতে তিনি নেতা হিসেবে মানেন না। এই প্রসঙ্গে গোয়াতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক বলেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কাউকে নেত্রী হিসেবে মানেন না। এতে অসুবিধার কী আছে? তিনি তো ঠিকই বলছেন। আমিও বলছি আমার নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমিও বাকি কাউকে মানি না। উনি যদি আমার বিরুদ্ধে কথা বলেন, তবে প্রমাণিত আমাদের দলে গণতন্ত্র আছে।”
এদিন ডায়মন্ড হারবার মডেল নিয়েও কথা বলতে শোনা যায় অভিষেককে। তৃণমূল সাংসদ বলেন, “আমি ডায়মন্ড হারবারে সেল্ফ টেস্টের ওপর জোর দিয়েছি। এর পিছনে বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে। আরটিপিসিআর সকালে করালে রিপোর্ট আসতে রাত হয়ে যায়। কখনও আরও বেশি সময় লাগে। ওমিক্রন যেহেতু বেশি সংক্রমক, তাই প্রশাসনিক বৈঠকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে সেল্ফ টেস্টের ওপর বেশি জোর দেওয়া হবে। এরফলে ১০ মিনিটে করোনা রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব হবে।”
অভিষেকের ডায়মন্ড হারবার মডেলকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণের অভিযোগ ছিল, আগামী দু’মাস নিজের লোকসভা কেন্দ্রে যাবতীয় অনুষ্ঠান বন্ধ করার ঘোষণা করে মমতা সরকারের বিরোধিতা করেছেন অভিষেক। মমতার সঙ্গে দীর্ঘ ৩৭ বছর থাকার কথা জানিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, মমতা ছাড়া আর কাউকে তিনি নেতা হিসেবে মানেন না। স্পষ্টতই ইঙ্গিত ছিল অভিষেকের দিকে।
কল্যাণের এই মন্তব্য সামনে আসার পর থেকে কল্যাণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন এক শ্রেণীর তৃণমূল নেতা কর্মীরা। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কল্যাণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। এমনকি অনেক জায়গায় কল্যাণের কুশপুতলও পোড়ান তৃণমূল কর্মীরা। ‘শ্রীরামপুর নতুন সাংসদ চায়’ পোস্টে ছয়লাপ হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়া। বিরোধী দলগুলির তরফে দাবি করা হয়েছিল তৃণমূলে মমতা ও অভিষেকর মধ্যে চিড় ধরেছে।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “অভিষেক নিজের কথা বলছেন। মমতা দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপার্সন। এই নিয়ে আলোচনার কোনও অবকাশ নেই।” বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন, “এটা একান্ত তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই নিয়ে বাইরের কারোর কথা বলার কোনও জায়গা নেই।”
Be the first to comment