স্বামী বিবেকানন্দকে স্মরণ করে বুধবার তাঁর জন্মদিনটি ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্র জুড়ে পালন করা হচ্ছে সম্পূর্ণ অন্য এক আঙ্গিকে। কোভিডকালে সাধারণ মানুষের মঙ্গল কামনায় বেছে নেওয়া হয়েছে এই বিশেষ দিনটিকেই। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজস্ব ভাবনায় ও উদ্যোগে তাঁর সংসদীয় কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকায় স্বামীজিকে শ্রদ্ধা জানানো হবে এক অভিনব কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে। ডায়মন্ডহারবার, ফলতা, বিষ্ণুপুর, সাতগাছিয়া, বজবজ, মহেশতলা ও মেটিয়াবুরুজ এলাকায় দিনভর ৩০ হাজার সাধারণ মানুষের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন সাংসদ নিজেই।
অতিমারীতে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে ইতিমধ্যেই নানা উদ্যোগ ও ব্যবস্থা নিয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উদ্যোগেই ডায়মন্ডহারবারের ব্লকে ব্লকে, পঞ্চায়েতে, পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে খোলা হয়েছে একের পর এক কন্ট্রোল রুম, চালু হয়েছে ডক্টরস অন হুইলস, টেস্টিং অন হুইলস। চলছে মাস্ক বিলি, সচেতনতার প্রচার। ভিড় নিয়ন্ত্রণে তাঁর নির্দেশ মেনেই এলাকার দোকান-বাজার সপ্তাহে পরপর দু’দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এবার সাংসদের নিদান সাধারণ মানুষকে অনেক বেশি সংখ্যায় করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। ৮ জানুয়ারি আলিপুরে তাঁর সংসদীয় ক্ষেত্রের পর্যালোচনা বৈঠকেই অভিষেক জানান, করোনা পরিস্থিতিতে এবার বিবেকানন্দের জন্মদিনে কোনও বড় অনুষ্ঠান বা ব়্যালি হচ্ছে না। সমস্ত সরকারি অফিসে স্বামীজির ছবিতে মালা ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। বরং দিনটিকে স্মরণে রাখতে এবার স্বামীজির জন্মদিন পালন করতে হবে ‘মাস টেস্টিং’ বা ব্যাপক হারে করোনা পরীক্ষার মাধ্যমে।
সাংসদের নির্দেশ মেনেই প্রতি ব্লকের পঞ্চায়েতগুলির ক্ষেত্রে সমস্ত হেলথ সাবসেন্টার ও পুরসভার ক্ষেত্রে আরবান প্রাইমারি হেলথ সেন্টারগুলিতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত আশা কর্মী ও এএনএমরা ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করবেন। এছাড়াও বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও পুর এলাকার বিভিন্ন দোকান-বাজার, রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াবে ‘টেস্টিং অন হুইলস।’ ওই গাড়িতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীরা কোনও বাছবিচার না করেই অর্থাৎ উপসর্গ থাক আর না-ই থাক, পথচলতি মানুষের ‘র্যাট’ পরীক্ষা করবেন। আলিপুর ও ডায়মন্ডহারবার মহকুমা মিলিয়ে ২০টির বেশি এমন টেস্টিং গাড়ি ঘুরবে।
জেলা প্রশাসন ও সাংসদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় থাকছে করোনা পরীক্ষার জন্য বেশ কয়েক হাজার ‘সেলফ কিট।’ স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এই ‘সেলফ কিট’ এর মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা করবেন। কোনও কোনও স্বাস্থ্যকর্মীকে আবার সাধারণ মানুষকে করোনা পরীক্ষা করাতে বুঝিয়ে বাড়ি থেকে সাবসেন্টার ও ইউপিএইচসিতে নিয়ে আসার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার পর কারও রিপোর্ট পজিটিভ এলে তাঁদের নিজের নিজের বাড়িতে কীভাবে আলাদাভাবে থাকতে হবে তার পরামর্শ দেওয়া হবে। দরকারে সেফ হোম বা কোনও আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে গিয়ে রাখা হবে।
এদিকে মঙ্গলবার আলিপুর সদর মহকুমার ঠাকুরপুকুর-মহেশতলা ও বজবজ ১ নম্বর ব্লকে চালু হয় ডক্টরস অন হুইলস পরিষেবা। ঠাকুরপুকুর-মহেশতলা ব্লকে ছিলেন পরিবহণ রাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল। বজবজ ১ নম্বর ব্লকে স্থানীয় বিধায়ক অশোক দেব ও ফলতা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গির খান। এছাড়াও আলিপুরের মহকুমাশাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ-সহ মহকুমা ও ব্লক প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকরাও দু’টি জায়গাতেই উপস্থিত ছিলেন। চিকিৎসকদের সংগঠন প্রোটেক্ট দ্য ওয়ারিয়র্স-এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা: বিবর্তন সাহা ও ডা: সৌভিক ঘোষ।
Be the first to comment