কয়লা-কাণ্ডে প্রথম থেকেই অস্বস্তিতে রয়েছে শাসক দল। তৃণমূল বা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ লোকজনের নামই সামনে এসেছে এই মামলায়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কয়লা-কাণ্ডের তদন্ত শুরু হলেও এখনও চলছে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। এই দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় বারবার তলব করা হচ্ছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। নাম জড়িয়েছে তাঁর স্ত্রী রুজিরা ও অভিষেকের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরের। এবার এই মামলায় ফের তলব করা হল অভিষেকের স্ত্রী ও শ্যালিকাকে। আগামিকাল বুধবার স্ত্রী রুজিরা ও বৃহস্পতিবার শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরকে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
কয়লা পাচারকাণ্ডে মঙ্গলবার দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল অভিষেককে। সেই হাজিরা এড়িয়ে যান সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইডি দফতরে এ দিন যাননি তিনি। মঙ্গলবার সকালেই ইমেল করে ইডিকে জানিয়ে দেন, ব্যক্তিগত কারণে তিনি যেতে পারছেন না।
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন অভিষেক। দিল্লিতে গিয়ে বারবার ইডি-র সম্মুখীন হওয়া সমস্যার তাই তাঁর দাবি ছিল, জেরা করা হলে, তা যেন কলকাতাতেই হয়। কিন্তু সেই মামলা গৃহীতই হয়নি।
এর আগে একাধিকবার রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু হাজিরা দেননি তিনি। ছোট সন্তানকে রেখে দিল্লি যাওয়া সম্ভব নয়, এই কারণই দর্শানো হয়েছিল। আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তাঁরা। এবার ফের একবার রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠাল ইডি। আগামিকাল বুধবারই তাঁকে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাই নয়, কয়লা-কাণ্ডে তলব করা হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকাকেও। যা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। স্ত্রী ও শ্যালিকার নামে থাকা অ্যাকাউন্টে, কয়লা কেলেঙ্কারির টাকা ঢুকত, এমনটাই অভিযোগ উঠেছে।
মূলত বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্টের লেনদেনের বিষয়ে জানতে চান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখেছেন তাঁরা। দুটি বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিষয়েই তথ্য চান তদন্তকারীরা। ওই অ্যাকাউন্টে কয়লা পাচারের টাকা যেত কি না, সেটাই খতিয়ে দেখা হবে। সূত্রের খবর, এর আগে যখন অভিষেক তদন্তকারী আধিকারিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন, তখন তাঁকে অ্যাকাউন্ট নম্বর দেখিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সেটি কার।
যদিও অভিষেকের দাবি, বিরোধীরা চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘অভিষেককে ভয় পায় বিজেপি। মোদী-অমিত শাহ ভয় পেয়েছেন, তাই বিধানসভা ভোটের পর থেকে অভিষেককে ক্রমাগত আক্রমণ করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিষেককে আক্রমণ করা হচ্ছে।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘এত ভয় কেন?’
Be the first to comment