সামনেই পুরভোট। আর তার আগে দলের নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন বাধাপ্রাপ্ত হলে কিংবা কাউকে জোর করে ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠলে সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার পর্যন্ত করা হতে পারে। এমই কড়া বার্তা দিলেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। শনিবার দক্ষিণ কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাস হলে পুরভোটের প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসে তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন মেয়র তথা এবারের প্রার্থী ফিরহাদ হাকিম সহ অন্য শীর্ষ নেতৃত্ব।
এদিনের বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মাথা নিচু করে সব মানুষের কাছে যেতে হবে। কে CPIM, কে কংগ্রেস, কে BJP করে দেখার দরকার নেই। যে মানুষ কোনও কারণে এখনও বিরূপ রয়েছেন তাঁদের কাছে যেতে হবে। দল বড় হয়েছে, সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। পুরনো নতুন কর্মী সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘ত্রিপুরা, গোয়া সহ অনেকগুলি রাজ্যে তৃণমূল পৌঁছে গিয়েছে। আগামী দিনে আরও রাজ্যে যাবে। লক্ষ্য ২০২৪ সাল।’
বৈঠক শেষে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ফিরহাদ হাকিম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা তুলে ধরেন তিনি। ফিরহাদ বলেন, ‘পথ ভাবে আমি দেব, রথ ভাবে আমি। মূর্তি ভাবে আমি দেব, হাসেন অন্তর্যামী। যে যাই ভাবুক না কেন, মাথায় রাখতে হবে সবার উপরে দল আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ দলীয় কর্মীদের অভিষেকের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি টিকিট না পাওয়া প্রার্থীদেরও দলের নানা কাজে লাগানোর কথা জানান তিনি।
সম্ভাব্য নির্দেশাবলী
তৃণমূল সূত্রে খবর, এদিনের বৈঠকে নির্বাচনী প্রস্তুতি সংক্রান্ত আলোচনা ও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সমস্ত প্রার্থীদের। সেগুলির মধ্যে সম্ভাব্য় তালিকা দেওয়া হল-
১) অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করাই লক্ষ্য। কোনওরকম অশান্তি বরদাস্ত করবে না নেতৃত্ব।
২) বিরোধীদের করা কোনওরকম অপপ্রচারে পা দিতে নিষেধ করা হয়েছে।
৩) অতি উৎসাহে কর্মীরাও যাতে সংযম না হারান, সেদিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
৪) আগামী কয়েকদিন নিবিড় জনসংযোগ বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলীয় কর্মীদের।
৫) স্থানীয় এলাকার উন্নয়নে জোর দেওয়ার পাশাপাশি সবরকমভাবে রাজ্য সরকারের স্কিমগুলিকেও প্রচারের আলোয় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৬) রাজনৈতিকভাবে BJP, কংগ্রেস এবং CPIM একজোট হয়ে রাজ্য সরকারের বিরোধীতা করছে, তা সাধারণ মানুষকে আরও বেশি করে বোঝাতে হবে।
৭) দলের সব সংগঠন, শাখা সংগঠন, গণ সংগঠনকে একসূত্রে বেঁধে প্রচার করতে হবে। যাদের কোনও অভিমান রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে প্রচারে সামিল করতে হবে। অর্থাৎ কোনওভাবেই কোন্দল বরদাস্ত করবে না নেতৃত্ব।
৮) রাজ্য সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পুরভোট নির্বাচন জয়ই তৃণমূলের লক্ষ্য। আর এই জয়ে সর্বস্তরের মানুষকে সামিল করতে বলা হয়েছে।
Be the first to comment