অভিষেকের হস্তক্ষেপে সফল অস্ত্রোপচার সদ্যোজাতর, কৃতজ্ঞতা জানাল পরিবার

Spread the love

মাত্র একটা ফোন। পরিবারের কাতর আরজি শুনেই সদ্যোজাতর চিকিৎসার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হৃদযন্ত্রে ব্যয়বহুল জটিল অপারেশনের পর আপাতত সুস্থই আছে সেই একরত্তি। পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্যের প্রাণ বাঁচানোর জন্য ফেসবুকে সাংসদকে ধন্যবাদ জানালেন সেই খুদের দাদু। লিখলেন, “মানুষ মানুষের জন্য, কথাটি আবার প্রমাণিত হল।”

শিশুটির পরিবার সূত্রে খবর, কাল অর্থাৎ মঙ্গলবার অপারেশন হয়েছে। অস্ত্রোপচার করে সাত চিকিৎসকের একটি টিম। হোয়াটসঅ্যাপ কলে গোটা প্রক্রিয়াটি তদারকি করেন প্রখ্যাত চিকিৎসক দেবী শেট্টি। আপাতত ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ওই একরত্তিকে। হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার ব্যয়বহুল হলেও পরিবারের কানাকড়িও খরচ হয়নি বলে খবর। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, বেসরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসার ন্যূনতম খরচ ১০ লক্ষ টাকা। পুরো খরচ বহন করেছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, শিশুটির পরিবারকে তিনি জানিয়েছিলেন, “টাকা পয়সা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। হাসপাতালে কোনও টাকা দেওয়ার দরকার নেই।”

এদিন সম্পর্কে সদ্যোজাতর দাদু তথা বিজেপি কর্মী গৌতম ভট্টাচার্য ফেসবুকে লেখেন, “মানবিক অভিষেক ব্যানার্জি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক, সাংসদের প্রতি আমি ও আমাদের পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে বিনম্র স্বীকারোক্তি ও ভালোবাসা জানাই। সেই সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে অনির্বাণ মাইতি ও যে বা যারা আমাদের পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ মাত্র তিন দিনের একরত্তি শিশুর হৃদযন্ত্রের চিকিৎসার জন্য আবেদন করেছিলেন তাঁদের প্রতি আমার প্রণাম।” তিনি আরও লিখেছেন, “রাজনীতির ঊর্ধ্বে মানবিকতা যে অনেক বড় সেটা আজকের দিনে খুব কম দেখা যায়। ‘মানুষ মানুষের জন্য` এই কথাটি আবার প্রমাণিত হল।”

https://www.facebook.com/goutam.bhattacharjee.399/posts/4758589200889707

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, গৌতমবাবু দীর্ঘদিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করেছেন। খুব ভাল স্লোগান দিতে পারেন, তাই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁকে খুব পছন্দ করতেন। বিভিন্ন মিছিলে তাঁকে দেখা যেত। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটের আগে দলবদল করেন গৌতমবাবু। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। এখনও গেরুয়া শিবিরের কর্মী তিনি। গৌতমবাবুর কথায়, আমার রাজনৈতিক পরিচয় লুকিয়ে রাখার কিছু নেই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়ক সুমিত রায়কে ফোন করেছিলাম চিকিৎসার জন্য। দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে এগিয়ে আসেন অভিষেক। জানিয়েছিলেন, চিন্তার কিছু নেই। চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়ে যাবে।” তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের মানবিকতায় মুগ্ধ তিনি। বলছেন, ”অন্য দলে থেকেও ওঁকে কুর্নিশ জানাতে বাধা নেই।”

কে এই সদ্যোজাত? নদিয়া জেলার হরিণঘাটার নগরউখড়ার মহাদেবপুরের বাসিন্দা পূজা দেবনাথ দমদমের এক নার্সিংহোমে সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পরই সদ্যোজাতর হৃদযন্ত্রে সমস্যা ধরা পড়ে। যার চিকিৎসা খুব ব্যয় সাপেক্ষ। পরিবারের সেই চিকিৎসা করানোর ক্ষমতা ছিল না। আর সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএমে ভরতি করার মতো চেনাজানা ছিল না তাঁদের। বিষয়টি ফেসবুকে পোস্ট করেন বামমনস্ক টলিউডের শিল্পী অনির্বাণ মাইতি। সেই আবদনে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন সাংসদ এবং তাঁর টিম। বিজেপি-সিপিএম-তৃণমূলের ভেদাভেদ না করেই ঝাঁপিয়ে পড়ে সদ্যোজাতর প্রাণরক্ষা করলেন তিনি। 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*