বরাবরই উত্তরবঙ্গ দক্ষিণবঙ্গ বলার বিরোধী তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বারবারই বলেন, বঙ্গ এক- সেটা পশ্চিমবঙ্গ। শনিবার মাথাভাঙায় তৃণমূলের সমাবেশ থেকে অভিষেক বাংলা ভাগের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেন। স্পষ্ট জানালেন, আলাদা রাজ্যের কথা যাঁরা বলবেন তাঁদের তলা বন্ধ করে রাখুন।
উত্তরবঙ্গে নিজেদের আধিপত্য বজয়া রাখতে দীর্ঘদিন ধরে ভাগাভাগিতে উস্কানি দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির উত্তরবঙ্গের ছোট-বড়-মাঝারি নেতারা ভোট এলেই উত্তরবঙ্গ ভাগের উস্কানি দেন। সেই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে এদিন বাংলাভাগের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সরব হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বিজেপিকে তোপ দেগে তিনি বলেন, বলেন, “উত্তরবঙ্গ শব্দটাতে আমার আপত্তি। আমাদের কাছে একটাই বঙ্গ, সেটা পশ্চিমবঙ্গ। আলাদা রাজ্যের কথা যে বিজেপি নেতা বলবেন, তাঁকে তালাবন্ধ করে রাখুন। বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করতে হবে, যেন বেরোতে না পারে।” তাঁর মতে, বাংলাভাগের চাক্রান্তের বিরুদ্ধে এই সমাবেশই একটা জবাব।
এদিনের সভা থেকে ২০১৯ ও ২০২১-এর সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা মেনে নেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বলেন, ”আমাদের ভুলের কারণে কোচবিহার (Cochbehar) থেকে ২০১৯ ও ২০২১ সালে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। আজ থেকে কোচবিহারের দায়িত্ব আমার।” তবে, এই সভা কোচবিহারের পালাবদলের সমাবেশ। এখান থেকে লড়াই শুরু হল বলে মন্তব্য করেন অভিষেক। ”২০১৯ ও ২০২১ সালে মানুষ আমাদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখেছিল। এখন বুঝতে পারছি, দু’-চারটে লোকের কুকর্মে-অপকর্মের জন্য এটা হয়েছিল। গতবার পঞ্চায়েতে আমাদের ভুল হয়েছিল।” তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের স্পষ্ট বার্তা দেন, দু-চারজনের জন্য দলের অপমান সহ্য করব না। কারও জন্য যদি মাথা নীচু হয়, সে যত বড়ই হোক রেয়াত করব না। “কাল থেকে বাড়ি-বাড়ি মানুষের কাছে যান। তাঁদের কথা শুনুন“- নির্দেশ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের।
অভিষেক প্রতিশ্রুতি, “আজ থেকে কোচবিহারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলাম“। একই সঙ্গে তিনি বলেন, কোনও দাদার ব্যাগ-বোতল বয়ে পঞ্চায়েতের টিকিট পাওয়া যাবে না। মানুষ যাকে চাইবেন তিনিই টিকিট মিলবে। বলেন, “কেউ আমার নাম ভাঙিয়ে নিজেকে প্রার্থী বলে দাবি করলে সরাসরি আমায় জানান। আমি ব্যবস্থা নেব“। দল বদলুদের নিয়ে অভিষেক তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, “আমরা দলের আবর্জনা বের করে দিয়েছি। কারণ আমরা বিশ্বাস করি দুষ্টু গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভাল। আর বিজেপি ওনাকে সাংসদ করে পাঠিয়েছে।”
Be the first to comment