মালদায় যুবতিকে মারধর করে অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠলো যুবকের বিরুদ্ধে। ১৪ তারিখ থেকে নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার যুবতির দেহটি কলেজের এলাকা থেকে উদ্ধার হয়। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার রতুয়া এলাকায়। যুবতি নিখোঁজ থাকাকালীনই অভিযুক্ত শেখ বাপিকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় এলাকাবাসী। তার বিরুদ্ধে যুবতির পরিবারের কাছ থেকে চাকরি পাওয়ার নামে ২০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। গতকাল যুবতির দেহ উদ্ধার হলে রতুয়া থানার পুলিশ চাঁচল মহকুমা আদালতের মাধ্যমে বাপিকে ১০ দিনের পুলিশি হেপাজতে নেয়।
উল্লেখ্য, সোমবার সকালে কলেজের উদ্দেশে রওনা দেয় যুবতি। ফেরার সময় পেরিয়ে গেলেও সে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খুঁজতে শুরু করে তাঁকে। রাত পর্যন্ত খোঁজ না মেলায় পরিবারের লোকজন নিখোঁজ ডায়েরি করে রতুয়া থানায়। এলাকাবাসী জানতে পারলে তারাই শেখ বাপিকে ধরে পুলিশে দেয়। তারপর শুক্রবার যুবতির ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর মুখে এমনভাবে অ্যাসিড দেওয়া হয়েছিল যে মুখের কোনও অংশে চামড়া বা চুলের লেশমাত্র দেখা যায়নি। খুনের ঘটনা সামনে আসার পর এলাকাবাসীর দাবি, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক দোষীদের।
ঘটনার পর জানা যায়, শেখ বাপির সঙ্গে যুবতির দু’বছর আগে কোর্টে নিকাহ হয়েছিল। খুব তাড়াতাড়িই সামাজিকভাবে নিকাহর পরিকল্পনা ছিল । পরিবারের অভিযোগ, এই দু’বছরে একাধিকবার যুবতির পরিবারের থেকে সেনা বাহিনীতে নিজের চাকরি পাওয়ার নাম করে টাকা নেয় বাপি । ২০ লাখ টাকা মোট নেওয়ার পর চাকরি পেয়েছে বলে জানায়। কিন্তু সেটা আদৌ সত্যি কি না তা নিয়ে ধন্দে ছিল পরিবার। তার বিরুদ্ধে আরও অনেক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগও রয়েছে।
এবিষয়ে যুবতির দাদা বলেন, “দু’বছর আগে রতুয়ার হাটখোলার যুবক শেখ বাপির সঙ্গে বোনের কোর্টে নিকাহ হয়। এরপরই সেনাবাহিনীতে চাকরির নামে আমাদের থেকে ২০ লাখ টাকা নেয়। ১৪ তারিখ বোনের এক বান্ধবী ওকে কলেজে নিয়ে যাওয়ার নামে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। আমরা জানি কলেজেই গেছে। রাতে বাড়ি না ফেরায় বোনকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। ওর মোবাইল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ওর বান্ধবীর কাছে জানতে চাওয়া হলে সে জানায়, বোন তার শওহরের সঙ্গে রয়েছে। বোনের শওহরকে ফোন করে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে সে জানায়, তার কিছুই জানা নেই। আমরা সমস্ত ঘটনা এলাকায় জানাই। রতুয়া থানায় আমরা বোনের মিসিং ডায়েরি করি। সমাজের লোকজন বোনের শহওরকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ কোর্টের মাধ্যমে বোনের শওহরকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেয়।
এবিষয়ে রতুয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, ১৪ তারিখ ওই যুবতির মিসিং ডায়েরি করা হয়েছিলো। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শেখ বাপি নামে এক যুবককে কোর্টের মাধ্যমে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। যুবতির মৃতদেহটিকে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলেই মৃত্যুর কারণে জানা যাবে। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন করে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
Be the first to comment